বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রবিবার সাতজন, সোমবার চারজন এবং মঙ্গলবার আরও তিনজন জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এদিন যে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা সকলেই ভিনরাজ্য থেকে সম্প্রতি বাড়ি ফিরে এসেছেন। পরিযায়ী শ্রমিকরা জেলায় ফিরে আসার পর করোনা আক্রান্তের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। গোটা বিষয়টিতে চিন্তিত জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তর। পূর্ব মেদিনীপুরের সিএমওএইচ নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, মঙ্গলবার জেলায় মোট তিনজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি হলদিয়ায় এবং একজনের বাড়ি এগরা শহরে।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্যজেলার পেন্ডিং রিপোর্টের সংখ্যা ২১৫৭টি। অর্থাৎ নমুনা সংগ্রহ করা হলেও তার রিপোর্ট আসেনি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিপুল সংখ্যক রিপোর্ট পেন্ডিং থাকায় নমুনা সংগ্রহের কাজে প্রভাব পড়ছে। লকডাউনের মধ্যে জেলার পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্য রাজ্য থেকে ফিরে আসার পর দৈনিক গড়ে পাঁচশো নমুনা সংগ্রহ করে টেস্টের জন্য পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু, টেস্ট হতে সময় লাগছে। রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। আগে একদিনের ব্যবধানে রিপোর্ট এলেও এখন সেটা চার-পাঁচদিন হয়ে যাচ্ছে। তাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের যেমন টেনশন বাড়ছে, তেমনই বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে রোগী ডিসচার্জ করতে সময় লাগছে।
নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার অবস্থাটা আরও খারাপ। ওই স্বাস্থ্যজেলা থেকে নমুনা পাঠানো হচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সাড়ে সাতশো নমুনা জমা হওয়ার পর ১৬মে থেকে কিছুদিনের জন্য নমুনা নেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিল। এই মুহূর্তে চারশো রিপোর্ট পেন্ডিং। সেজন্য নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার অধীন নন্দীগ্রাম, খেজুরি, চণ্ডীপুর, রামনগর, ভগবানপুর-২, কাঁথি শহর প্রভৃতি এলাকায় ধীর গতিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্যজেলায় এখনও পর্যন্ত ৫৪৫৩জনের করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তারমধ্যে রিপোর্ট এসেছে ৩২৪৩জনের। রিপোর্ট পেন্ডিং রয়েছে ২১৫৭জনের। পরিযায়ী শ্রমিকরা দলে দলে জেলায় ফেরার পর সকলের নমুনা টেস্ট করার জন্য প্রায় প্রতিটি ব্লকে স্যাম্পেল কালেকশন সেন্টার খুলে দেওয়া হয়। আগে দিনে একশো নমুনা সংগ্রহ হলেও সেটা বেড়ে দৈনিক গড়ে পাঁচশোতে গিয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু, টেস্টের জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পর সেখানে নমুনার পাহাড় জমছে। তাতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এগরা পুরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডে দীঘা মোড় সংলগ্ন এলাকায় ১৯বছরের এক কিশোর গত ১৯মে মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে আসে। ভিনরাজ্য থেকে ফেরার পর হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিল ওই পরিযায়ী শ্রমিক। গত ২১তারিখ তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মঙ্গলবার ওই যুবকের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্ত যুবকের পরিবার ওই এলাকায় ভাড়ায় থাকে। আক্রান্ত ওই যুবকের সঙ্গে আরও চারজন মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে এসেছেন। তাঁদের এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল এগরা শহরেই। প্রায় দু’মাসের ব্যবধানে ফের এগরা শহরে করোনা আক্রান্তের ঘটনা ঘটল।
অন্যদিকে, হলদিয়া পুরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডে বিরিঞ্চিবেড়িয়া এলাকায় ২৮বছর বয়সি এক যুবক এবং ২৪নম্বর ওয়ার্ডের নেড়ারচক এলাকার ২৭বছর বয়সি আর এক যুবক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। নেড়ারচকের যুবক মহারাষ্ট্র থেকে ২২মে বাড়ি ফিরে আসেন। তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। অন্যদিকে বিরিঞ্চিবেড়িয়ার আক্রান্ত যুবক উত্তরপ্রদেশে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতেন। তিনি দিন চারেক আগে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে তাঁদের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। আক্রান্ত দু’জনের বাড়ির সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুই করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বড়মা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। হলদিয়ার টাউনশিপে মাখনবাবুর বাজার এলাকায় আইওসি-র অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং ঝাড়গ্রামের আরও একজন সুস্থ হয়ে এদিন বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।