বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও জেবি ভাস্কর বলেন, খবর পাওয়ার পর থেকেই বনদপ্তরের কর্মী ও বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় আগুন এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আগুন এখনও পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে শুশুনিয়া পাহাড়ের ভরতপুর গ্রামের কাছে পাহাড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বিষয়টি বনদপ্তরকে জানালে বনদপ্তরের কর্মী ও বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার বিকেলে ওই আগুন নেভান। এরপর ফের রাত ১০টা নাগাদ নতুন করে বেশ কয়েকটি জায়গায় আগুন দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বনদপ্তর ও দমকল খবর দেন। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এলেও আগুন পাহাড়ের অনেক উঁচুতে লাগায় দমকল কর্মীরা সেখানে পৌঁছতে পারবেন না বলে ফিরে যেতে বাধ্য হন। অন্যদিকে, রাতের অন্ধকারে পাহাড়ে থাকা বিভিন্ন জীবজন্তু, সাপের ভয়ে সাধারণ মানুষও পাহাড়ে উঠে আগুন নেভাতে সাহস পাননি। ফলে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
পাহাড়তলির আশেপাশের গ্রাম ছাড়াও ছাতনা, ঝাঁটিপাহাড়ি, শুশুনিয়ার ৮-১০ কিলোমিটার দূর থেকেও আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। পাহাড়ে লাগা ভয়াবহ আগুন দেখতে মাঝ রাতেই পাহাড়ের কোলে বহু গ্রামের মানুষ ভিড় জমান। তবে ভোরের আলো ফুটতেই বন সুরক্ষা কমিটি, বনদপ্তর ও বাঁকুড়া এক্সপ্লোশন অব নেচার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা আগুন নেভানোর জন্য পাহাড়ে ওঠেন।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গিধুড়িয়া গ্রাম লাগোয়া পাহাড়ের প্রায় ২০০ মিটার উঁচুতে ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। বন সুরক্ষা কমিটি, বনদপ্তরের লোকজন লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। হাওয়া মেশিন দিয়ে পাহাড়ে পড়ে থাকা পাতা সরিয়ে আগুনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করারও চেষ্টা চলে। ছাতনা থানার পুলিস তাঁদের সহায়তা করছে।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে হাজির হয়। আগুন উপরে থাকায় তারা এদিনও সেভাবে কাজ করতে পারেনি। বনদপ্তরের কর্মীদের সঙ্গে তারাও উপরে গিয়ে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। তবে সকাল থেকে পাহাড়তলি এলাকায় জোরে হাওয়া বইতে থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে নাকানিচোবানি খেতে হয়।
অন্যদিকে, বাঁকুড়ার মতো পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়ের পাদদেশে কলেজ পাহাড়ে মঙ্গলবার আগুন লাগে। বুধবার আগুনের রেশ বাড়তে থাকায় এলাকায় যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়ায়। রঘুনাথপুর বনদপ্তরের এক কর্মী বলেন, যে পাহাড়টিতে আগুন লেগেছে সেটি বনদপ্তরের নয়। পাহাড়টি ভেস্ট ল্যান্ড। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ও বনদপ্তর ওই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। দমকলকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু, ইঞ্জিন এসেও ফিরে যায়। বুধবার আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় দমকলের একটি ইঞ্জিন ফের এসে আগুন নেভাতে শুরু করে।
উল্লেখ্য, এর আগে সাঁতুড়ির রামচন্দ্রপুর, বড়ন্তি ও নিতুড়িয়ার পঞ্চকোট পাহাড়ের আগুন লাগে। বনদপ্তর তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। রঘুনাথপুরের রেঞ্জ অফিসার বিবেক ওঝা বলেন, বনদপ্তরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে রাত দিন পরিশ্রম করে তিনটি পাহাড়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। কলেজ পাহাড়ের আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।