বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ডিসেম্বর পুর চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার আদক অফিস টাইমের পর অতিরিক্ত চার ঘণ্টা কাজের জন্য নির্দেশিকা জারি করেন। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ১৫জন আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীকে বিকেল ৫টার পর অতিরিক্ত চার ঘণ্টা অর্থাৎ রাত ৯টা পর্যন্ত অফিসে কাজ করার নির্দেশ দেন। এই তালিকায় রয়েছেন এগজিকিউটিভ অফিসার, হেড ক্লার্ক, অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিসটেন্ট ক্যাশিয়ার, চারজন ক্লার্ক, পিওন সহ অন্যান্য কর্মীরা। নির্দেশিকায় লেখা রয়েছে, অফিসের প্রয়োজন এবং জনসাধারণের পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুরকর্মীদের কাজের সময়। চেয়ারম্যানের এই নির্দেশিকায় সংশ্লিষ্ট পুরকর্মীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পুরসভা চত্বরে এনিয়ে গুঞ্জন রয়েছে। ওই কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, এভাবে সারাদিন একটানা কাজ করা সম্ভব নয়। বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে। ফের সকালে উঠেই অফিস চলে আসতে হচ্ছে। বাড়ির কোনও কাজ হচ্ছে না। ওভারটাইমের জন্য কী ধরনের অ্যালাউন্স দেওয়া হবে, তাও জানানো হয়নি। কর্মীদের বক্তব্য, পুরসভায় অফিস ছুটি ৫টায় হলেও কাজ থাকলে তা শেষ করেই বাড়ি ফেরেন কর্মীরা। সেক্ষেত্রে অনেক কর্মীই দু’তিন ঘণ্টা বাড়তি কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়ম চালু রয়েছে। তাছাড়া আগে থেকে পরিকল্পনা করে কাজ করলে অফিস টাইমের মধ্যেই বেশিরভাগ কাজ শেষ করা সম্ভব। এজন্য নতুন করে সরকারি নির্দেশনামার প্রয়োজন ছিল না।
পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামলবাবু বলেন, হলদিয়া পুরসভায় একদিকে কর্মীর অভাব, অন্যদিকে প্রচণ্ড কাজের চাপ রয়েছে। দু’টি বিষয়কে সামাল দিতেই অতিরিক্ত চার ঘণ্টা কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থেই এই নির্দেশিকা। পুরসভায় এখন বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের কাজ, পরিষেবামূলক কাজের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। কাজ বাড়লেও একের পর এক কর্মী অবসর নেওয়ায় পুরসভা কর্তৃপক্ষ সমস্যায় পড়েছে। ফাঁকা পদ পূরণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু, কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এই নির্দেশিকার অর্থ, আসুন আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি। সকাল সাড়ে ১০টার সময়ে অফিসে আসার পর কাজের জন্য আমি প্রায়ই রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত অফিসে থাকি। সেই সময় যে কাজের ফাইল দরকার, তা সময়মতো না পেলে কাজ পিছিয়ে যায়। এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানদের দরকার হয়। চেয়ারম্যানকে সাহায্য করার জন্য এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশিকা কোনওভাবেই শ্রমআইন বিরোধী নয়। ওভারটাইমের জন্য কর্মীদের পুরসভা থেকে টিফিন অ্যালাউন্স দেওয়া হবে। এজন্য বোর্ড মিটিং করে পুরসভা সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তাছাড়া কাজের শেষে কর্মীদের রাতে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি প্রদীপ বিজলি বলেন, এই নির্দেশিকা শ্রমআইন বিরোধী। এর বিরুদ্ধে বিএমএস সরব হবে।