বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এনিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল আসোসিয়েশনের কাটোয়া শাখার সভাপতি ডাঃ পরেশচন্দ্র দাস বলেন, এনআরএসে জুনিয়র চিকিৎসককে যেভাবে মারা হয়েছে তাতে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাই আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি। তবে হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা খোলা আছে। শুধু আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।
এদিন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগে বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু শিশুকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন তাদের বাড়ির লোক। কিন্তু এসএনসিইউয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়েই তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে। অনেকে আবার আউটডোরে এসেও চিকিৎসক না থাকায় ফিরে গিয়েছেন। সাধারণত শিশু জন্মানোর পর দেড় থেকে দু’বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের এসএনসিইউ বিভাগে প্রতিমাসে শারীরিক নানা পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসতে হয়। তারজন্য প্রতি শিশুর বাড়িতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়। তাতেই শিশুকে তার মা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু এদিন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য এসএনসিইউ বিভাগে ভর্তি থাকা অনেক শিশুকে বাইরে মোটা টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। কারণ চিকিৎসা না হলে ওই শিশুকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দেওয়া হয় না।
কেতুগ্রামের কেঁওগুড়ির বাসিন্দা মন্দিরা দাস তাঁর সাত মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে এদিন হাসপাতালে আসেন। কিন্তু এসএনসিইউ বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় তাঁকে। মন্দিরাদেবী বলেন, এদিন আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেছিল। এসে দেখি কোনও চিকিৎসক নেই। এখন আমাকে বাইরে থেকে গাড়ি ভাড়া করেই বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ জেলার সালার থেকে শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন রেহেনা বিবি, কেতুগ্রামের চাকটার বাসিন্দা তহমিনা বিবি। তাঁরা বলেন, সকালে এসে লাইনে দাঁড়ানোর পর আমাদের বলা হয় এসএনসিইউ বিভাগ বন্ধ।
এদিকে, এদিন হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবাও সারাদিন ধরে বন্ধ ছিল। সকাল থেকেই প্রচুর রোগী এসে নাকাল হয়ে ফিরে গিয়েছেন। তবে হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ায় চূড়ান্ত নাকাল হতে হয়েছে প্রসূতিদের। এদিন মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম প্রভৃতি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির আউটডোর পরিষেবা বন্ধ থাকায় অনেককে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এব্যাপারে হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল বলেন, চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে এই সমস্যা হয়েছে। আমরা একটি নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে ওই শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।
অন্যদিকে, কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও আউটডোর বন্ধ রেখে প্রতিবাদে শামিল হন চিকিৎসকরা। যদিও জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যুক্ত ছিলেন। চিকিৎসকরা হাসপাতালে একটি প্রতিবাদ মিছিল করেন। হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, আউটডোর পরিষেবা বন্ধ ছিল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ইসিজি সমস্ত চালু ছিল।
অপরদিকে, আসানসোল জেলা হাসপাতাল ও দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরাও আন্দোলনে নামেন। চিকিৎসকরা গেটের সামনে অবস্থানে বসেন। হাসপাতাল চত্বরে কালো ব্যাজ পরে মিছিল করেন। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালে আউটডোর বন্ধ ছিল। দুর্গাপুরেও দীর্ঘক্ষণ আউটডোর বন্ধ ছিল। এমনিতেই দুই হাসপাতালে আউটডোরে প্রতিদিন ভিড় উপচে পড়ে। এদিন দেরিতে আউটডোর খোলায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও এদিন আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসকরা আসানসোল শহরে মিছিল করেন। দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পড়ুয়ারাও প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন।