বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ভীমগড় থেকে মৌরগ্রাম পর্যন্ত ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় নিত্যদিনের দুঘর্টনার খবরে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। বেশ কয়েক বছর ধরেই দুর্ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে তিনি বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। পুলিসকে একাধিক পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি বসানোর অর্থ বরাদ্দ করে জাতীয় সড়কের উপর নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে দুর্ঘটনা কিছুটা কমলেও ২০১৮ সালে দুর্ঘটনা বাড়ায় পুলিসকে ভর্ৎসনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুঘর্টনার অন্যতম বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাথর বোঝাই লরি ডাম্পারের ওভারলোডিং। ৬ চাকা, ১০ চাকা ও ১২ চাকা গাড়িগুলি যে পরিমাণ সামগ্রী বহন করতে পারে প্রায় তার দ্বিগুণ পরিমাণ সামগ্রী বহন করছে। এর জেরে জাতীয় সড়কে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে যাচ্ছে, রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে বড় বড় গর্ত। মুখ্যমন্ত্রী যতই ক্ষোভ প্রকাশ করুন না কেন, বাড়তি অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন থানার পুলিস এই গাড়িগুলি ছেড়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। অনেক সময়েই অতিরিক্ত মাল পরিবহণের সময়ে গাড়িগুলি নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পেরে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। প্রাণ যাচ্ছে পথ চলতি সাধারণ মানুষের। অনেক সময়ে তারাপীঠে পুজো দিয়ে অটোয় করে ফেরার পথেও লরি ডাম্পারের ধাক্কায় প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের।
তবে শুধু দুর্ঘটনাই নয়, এই ওভারলোডেড গাড়িগুলি রাস্তায় বিভিন্ন সময়ে বিকল হয়ে যায়। যার জেরে রাস্তায় শুরু হয় যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষদের। পাঁচামি, রামপুরহাট, নলহাটি, রাজগ্রামের খাদান ক্র্যাশার থেকে এই ওভারলোডেড গাড়িগুলি দীর্ঘদিন যাতায়াত করছে তা দেখার জন্য আবার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর সিউড়িতে জাতীয় সড়কের উপর একটি চেকপোস্ট করেছে। সেখানে আবার গাড়ির কাগজপত্র দেখা হয়। যার জেরে প্রতিদিন যানজট শুরু হয়।
বিষয়টি উপলব্ধি করে প্রশাসন দাবি করে ওভারলোডিং আটকাতে খাদান এলাকাতেই কাঁটা বসিয়ে সেখানে গাড়ির লোড খতিয়ে দেখে গাড়ি ছাড়া হবে। প্রশাসন সেই ব্যবস্থা করতে গিয়ে অভিযোগ উঠছে, ব্যক্তিগত নজরদারিতে চলছে ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট(ডিসিআর) কাটা। এতে বেনিয়ম আরও মাথা চাড়া দিচ্ছে অন্যদিকে ওভারলোডিংও কমেনি। তবে শুধু পাথর নয় জেলার বালিঘাট থেকে ওভারলোডেড বালি বোঝাই গাড়িগুলি বিভিন্ন রাস্তায় ছুটছে। যার জেরে ক্রমশ খারাপ অবস্থার শিকার হচ্ছে বীরভূমের সড়ক ব্যবস্থা। তাই আরটিও দপ্তর গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা ফাইন আদায় করলেও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ জেলাবাসী।
জেলাবাসীর অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীকে সুবিধা পাইয়ে নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার পুলিস ও প্রশাসনের একাংশ যার জেরে চলছে সড়কপথে অরাজকতা।
অতিরিক্ত জেলাশাসক(এলআর) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ওভারলোডিংয়ে জন্য আমরা অভিযান চালাচ্ছি। তবু ওভারলোডিংয়ের সমস্যা রয়েছে। আমরা জাতীয় সড়কের পাশে একটি জায়গা দেখছি যেখানে ওভারলোডিং গাড়িগুলিকে দাঁড় করিয়ে অতিরিক্ত সামগ্রী আনলোড করা হবে এবং ফাইন নেওয়া হবে। (শেষ)