মঙ্গল ঘোষ, গাজোল: গ্রাম্য পরিবেশে বাংলার মনীষীদের স্মরণ করবে ইংলিশবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুড়াটুলী মহিলা পরিচালিত সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। সপ্তম বর্ষে তাঁদের পুজো মণ্ডপের থিম টালির চালের আদলে ‘গ্রাম বাংলার পুজো মণ্ডপে মনীষীদের স্মরণ’। এছাড়াও গ্রামের নানা প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে মণ্ডপের চারিদিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রাজা রামমোহন রায় সহ একাধিক মনীষীদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হবে। মূলত, নতুন প্রজন্মের কাছে বার্তা দিতে এই বিশেষ উদ্যোগ। এখন জোরকদমে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃতীয়ার দিন সন্ধ্যায় জনপ্রিয় গায়ক ঋষি চক্রবর্তী সহ নানা অতিথিদের সম্মান জানিয়ে ঘটা করে পুজোর শুভ উদ্বোধন করা হবে। এখানেই শেষ নয়, পুজোর পাঁচদিনও থাকছে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক, সাঁওতালি নৃত্যের মতো জমজমাট অনুষ্ঠান। এবারও নবমীতে অগণিত ভক্তদের পেট ভরে প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হবে। মহিলা পরিচালিত বলে মহালয়ার পর থেকেই পুজো নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ থাকে চোখে পড়ার মতো। উল্লেখ্য, ইংলিশবাজার শহরের বহু পুরনো পাড়া রয়েছে। তার মধ্যে এই পুড়াটুলি পাড়া অন্যতম। আগে থেকেই পাড়ার মহিলাদের দুর্গাপুজো করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ২০১৫ সালে ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলার প্রসেনজিৎ দাসের সদিচ্ছায় মহিলা পরিচালিত পুজো শুরু হয়। তিনি এখনও কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়ে পুজো বিষয়ক পরামর্শ দেন। তবে গোটা পুজোর দায়িত্ব মহিলাদের হাতে। তাঁরাই পুজো পরিচালনা করেন। বর্তমানে পুজোর প্রধান উপদেষ্টা পদে রয়েছেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছবি রানি দাস। এই মহিলা কমিটি প্রতি বছর বড় করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করে। অতীতে কমিটি হারিয়ে যাওয়া লাটাই ঘুড়ি সহ নানা থিম করে জেলাবাসীর মন জয় করে নিয়েছে। একাধিকবার জনপ্রিয় টলিউড অভিনেত্রীদের নিয়ে এসে পুজো উদ্বোধনও করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রসেনজিৎ দাস বলেন, এটা মহিলা পরিচালিত পুজো। তাঁরা এক সঙ্গে মিলে পুজোর আয়োজন করেন। আমরা কয়েকজন প্রথম থেকেই তাঁদের উৎসাহ প্রদান করছি। এবারে তাঁদের থিম ‘গ্রাম বাংলার পুজো মণ্ডপে মনীষীদের স্মরণ’। শুধু পুজো নয়, মহিলারা সারা বছর সমাজসেবা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। গরিব এলাকা বলে বর্ষায় দুঃস্থদের তাঁরা ত্রাণ সহ ত্রিপল দেন। এছাড়াও স্থানীয় মানুষজনদের বিপদে তাঁরা সবসময় ঝাঁপিয়ে পড়েন। নিজস্ব চিত্র