নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: করোনা নিয়ে এসেছে ব্যবসায় মন্দা। ফলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্য মানুষের দুয়ারে পৌঁছয়নি। দীর্ঘ দেড় বছর তাঁদের জীবিকা মারাত্মকভাবে মার খেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাছে মানুষকে পৌঁছে দিতে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে। প্রশাসন একইসঙ্গে মানুষকে জানাতে চাইছে, কীভাবে কত রকমের নিত্যনতুন কাজে লিপ্ত রয়েছে স্বনির্ভরগোষ্ঠীগুলি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আর্থিকভাবে উজ্জীবিত করে তুলতে তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে প্রশাসন বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে। আজ, বুধবার থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত তিনদিন ওই প্রদর্শনী চলবে। পাশাপাশি ‘আনন্দধারা’ প্রকল্পের প্রচার ও প্রসার করা হবে। জেলাশাসকের অফিস ক্যাম্পাসে ২৮টি স্টল থাকবে। যেখান থেকে ৫৬ জন শিল্পী তাঁদের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী করবেন। প্রদর্শনী স্টলে গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা সব্জি, জ্যান্ত মাছ থেকে শুরু করে হস্তশিল্পীদের তৈরি গয়না, রকমারি পোশাক সবই থাকবে। আনা হবে বিশেষ প্রজাতির মুরগি কড়কনাথ ও লোভনীয় ফাস্ট ফুড। বাঁশ, বেত, পাট, প্লাস্টিকের তৈরি ঘর সাজানোর নানা ধরনের সামগ্রী রাখা হবে ওই প্রদর্শনীতে। জেলা গ্রামোন্নয়ন বিভাগের উদ্যোগে এই প্রদর্শনী ও প্রসার নিয়ে একদিকে যেমন উচ্ছ্বসিত দপ্তরের কর্মীরা, তেমনই খুশির মেজাজে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর শিল্পীরাও। জেলা গ্রামোন্নয়ন বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা সুদীপ পাল মঙ্গলবার বলেন, করোনার সময় তাঁরা যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছিল। তবে পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় তাঁরা নিজেদের কাজ চালিয়েছেন। তাই পুজোর আগে কিছুটা হলেও যাতে তাঁরা উজ্জীবিত হন, তারজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলা গ্রামোন্নয়ন বিভাগের উপ অধিকর্তা রিচার্ড লেপচা বলেন, কই, মাগুরের মতো জিওল মাছ ছাড়াও রঙিন মাছ এবার প্রদর্শনীর আকর্ষণ হতে চলেছে। আমাদের এই প্রচেষ্টার একটা অন্যতম কারণ মানুষের সামনে আমরা আনতে চাই জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কত ভালো কাজ করে। যা সামনাসামনি দেখলে রীতিমতো তাক লেগে যাবে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ওই প্রদর্শনীতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি তাদের উৎপাদিত সব্জি, মাছ যেমন প্রদর্শনীর জন্য রাখবে, তেমনই ওসব তারা বিক্রি করতে পারবে।
জেলা প্রশাসন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যথার্থভাবে এগিয়ে দিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। আগে সরকারি দপ্তর থেকে ঠিক করা হতো নতুন কী প্রকল্পে গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগানো যায়। এখন গোষ্ঠীগুলির থেকেই জানতে চাওয়া হয় তারা কী প্রকল্পে বেশি উৎসাহী। কোন কৃষিপণ্য উৎপাদন করলে বা প্রাণিপালন করলে তারা উপকৃত হবে তারাই ঠিক করে দেয়। গোষ্ঠীগুলির থেকে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এতে ওদের সুবিধা হচ্ছে।