বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
রাজতন্ত্র নেই। রাজকীয় সেই জাঁকজমকও নেই। জমিদার বাড়ির নোনাধরা দেওয়ালে তবু যেন লুকিয়ে সেই বনেদিয়ানা। বছরের আর পাঁচটা দিন জমিদারবাড়ি ফাঁকা থাকলেও জন্মাষ্টমীর পর থেকে এই বাড়ি যেন প্রাণ ফিরে পায়। করোনার আতঙ্ক থাকলেও এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রাচীন এই রাজবাড়িতে এবারও মাটির মূর্তিতে প্রলেপ পড়ার কাজ শুরু হল। পাঁচ শতাধিক বছরের পুরনো জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির পুজো ঘিরে উৎসাহ রয়ে গিয়েছে একইরকম। করোনার কারণে এবার কিছুটা শঙ্কা থাকলেও জন্মাষ্টমীর পর নন্দপুজোর দিন প্রথা মেনেই শুরু হল দেবীর কাঠামো নির্মাণের কাজ।
রাজ পরিবারের বর্তমান পুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, এখানে বৈকুণ্ঠনাথের বিগ্রহ রয়েছে। প্রথা মেনে জন্মাষ্টমীর রাতে কৃষ্ণপুজো হয়। নন্দ উৎসবের দিন কাদা খেলার পর সেই মাটি দিয়ে মায়ের মূর্তি গড়ার কাজ শুরু হয়। রাজবাড়ির রথের মধ্যেই দুর্গা, অসুর, সিংহ, বাঘ, গণেশ ও কার্তিক থাকে। পাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী, জয়া, বিজয়া, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, চণ্ডী ও মহামায়ার কাঠামো বানানো হয়। মহালয়ায় কালীপুজোর পর প্রতিপদে ঘট বসে। একসময় এই পুজোয় নরবলি দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। যদিও বর্তমানে তা আর নেই। জলপাইগুড়ি শহরের এই পুজো ঘিরে আজও সমান উন্মাদনা। পুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ রাজবাড়িতে এসে ভিড় করেন। কিন্তু করোনা আবহে এবার সেই ছবির অনেকটাই বদল ঘটবে। ভিড় এড়াতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজপরিবারের বর্তমান সদস্য সৌম্য বসু বলেন, সরকারি নির্দেশিকা যেরকম থাকবে, আমরা সেভাবেই পুজো করব। এই পুজো ঘিরে মানুষের উৎসাহ ও আবেগ রয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ যেন না ছড়ায় সেদিকেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, জলপাইগুড়ি শহরে এই পুজোর আলাদা ঐতিহ্য। থিম পুজোর ভিড়েও এই পুজোর জৌলুস এতটুকু কমেনি। পুজো শুরুর দিন থেকে সিঁদুর খেলায় বহু মানুষ ভিড় করেন। প্রতিমা বিসর্জনেও ভিড় উপচে পড়ে। করোনার কারণে এবার হয়তো সেই ছবির দেখা মিলবে না। তবে পুজো হচ্ছে। এটাই আনন্দের। নিজস্ব চিত্র