বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আলিপুরদুয়ার-২, ফালাকাটা ও মাদারিহাট ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ঝড়ের দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ঝড়ের তাণ্ডবে ওই তিনটি ব্লকের ২১৭৭টি কাঁচা বাড়ি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টিনের চাল, বেড়া উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় ১২৩৪টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে। ঘরের উপরে গাছ চাপা পড়ে দু’টি শিশু সহ মোট ১৮ জন জখম হন। ময়নাগুড়ি ব্লকে ১০০০’র বেশি কাঁচাবাড়ি ভেঙে গিয়েছে। আজ, বুধবার ময়নাগুড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসার কথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের।
তুমুল ঝড় জমির পাকা বোরো ধান ও সব্জির খেত তছনছ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে বিদ্যুতের খুঁটি, বড় বড় গাছ ও গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুৎবাহী তারের উপর গিয়ে পড়ে। ফলে বহু এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে। সোমবার রাত থেকে ওসব এলাকা অন্ধকারে ডুবে আছে। মঙ্গলবার বিকেলের পর কয়েক জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও অধিকাংশ এলাকাই ছিল লো ভোল্টেজ কিংবা লোডশেডিং। যদিও বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি জানিয়েছে, পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
আলিপুরদুয়ার-২ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, টটপাড়া-১, ২, মহাকালগুড়ি, ভাটিবাড়ি, পারোকাটা, কোহিনূর, চাপড়েরপাড়-১, ২ ও শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েত ঝড়ে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ন’টি পঞ্চায়েতের ৩৫টি গ্রামে ৫৩০৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে ন’টি প্রাথমিক স্কুলের ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রিপল ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কাজ শুরু করেছে।
সোমবার রাতে ফালাকাটা ব্লকের উপর দিয়েও ঝড়টি বয়ে যায়। ব্লকের জটেশ্বর-১, ২, দেওগাঁ ও ময়রারডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। সেখানে ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল ১৫ মিনিট। বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার বলেন, ঝড়ে চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় ৫০০’র মতো কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়েছে। তারমধ্যে ২৫০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মাদারিহাটের রাঙালিবাজনা পঞ্চায়েতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রিনা শৈব কার্জি জানান, ঝড়ে তাঁর এলাকায় ২৫০টি কাঁচা বাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতি হয়েছে। ঘরের উপর গাছ পড়ে, গাছের মোটা ডাল ভেঙে পড়ে ফালাকাটা ও মাদারিহাট ব্লকের কয়েকজন জখম হন। তাঁরা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। গোটা এলাকায় এদিন বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা ছিন্ন থাকে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও মুখ থুবড়ে পড়ে।
সোমবার রাতের বিধ্বংসী ঝড়ে ময়নাগুড়ির আমগুড়ি, খাগড়াবাড়ি-২ ও চূড়াভাণ্ডরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর জমির বোরো ধান, পাট, ভুট্টা গাছ শুয়ে পড়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসেবে হাজার খানেক কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারেরবাড়িতে বেশকিছু দোকানের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। ছোটবড় মিলিয়ে হাজার দেড়েক গাছ ভেঙে পড়েছে। চারেরবাড়ির বাসিন্দা উত্তম মল্লিকের তিনবিঘাজুড়ে থাকা কলাবাগান পুরোটাই নষ্ট হয়েছে। ময়নাগুড়ির কৃষি আধিকারিক কৃষ্ণ রায় বলেন, কেপিএস’দের কাছে কৃষিজ ফসলের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এদিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিবম রায় বসুনিয়া, বিডিও ফিন্টোশ শেরপা।