বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
করোনা আক্রান্ত ওই পরিযায়ী শ্রমিক শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শনগরের বাসিন্দা। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, বেশ কয়েক মাস আগে দিনমজুরের কাজ করতে ওই ব্যক্তি দিল্লিতে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখান থেকে বিহার হয়ে ১৬ মে এখানে আসেন। প্রথমে আদর্শনগরে নিজের বাড়িতে আশ্রয় নেন। একরাত সেখানে কাটানোর পর স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের আপত্তিতে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুলিপাড়া বস্তিতে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে তিনি আশ্রয় নেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ২০ মে তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিস। তাঁর সোয়াবের নমুন সংগ্রহ করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভিআরডিএলে পাঠানো হয়। তাঁর সোয়াব টেস্টের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ মিলেছে।
করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে নিযুক্ত ওএসডি ডাঃ সুশান্তকুমার রায় বলেন, করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, এ নিয়ে কোভিড হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ন’জন।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়িতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, ১৮-২৩ মে পর্যন্ত ছ’দিনে পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন। দেড় মাসে শিলিগুড়ি শহর সহ দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২ জন। একজনের মৃত্যুও হয়েছে। তবু শহরবাসীর একাংশের হুঁশ নেই। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, পুলিস ও প্রশাসনের নজরদারি অভাবে এখানে সামাজিক দূরত্ব সেভাবে মানা হচ্ছে না। প্রতিদিন বিভিন্ন বাজারে অযথা কিছু লোক জটলা পাকাচ্ছে। অনেকের মুখে মাস্ক থাকছে না। কন্টেইনমেন্ট জোনের বাসিন্দারা বাইরে বেরচ্ছে। পুলিস ও প্রশাসনের আধিকারিকরা অবশ্য বলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। আমজনতাকে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সামাজিক দূরত্ব ভঙ্গের অভিযোগে ধরপাকাড়ও চলছে।
অন্যদিকে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে করোনা আক্রান্ত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের সংস্পর্শে আসা বাসিন্দাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই পরিযায়ী শ্রমিক ১৬-২৩ মে সকাল পর্যন্ত ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুলিপাড়া ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শনগরের মধ্যে একাধিকবার যাতায়াত করেছেন। শহরের বিভিন্ন বাজারেও ঘুরেছেন। তাঁর সংস্পর্শে পুলিস কর্মীরাও এসেছেন। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, ওই দিনমজুর এখানে আসার পর গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে তাঁর সংস্পর্শে আসা বাসিন্দাদের চিহ্নিত করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে তাঁর সংস্পর্শে আসা ১ নম্বর ওয়ার্ডে আটজন ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাতজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অধিকাংশই আক্রান্ত শ্রমিকের আত্মীয়। ইতিমধ্যে তাঁদেরকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
একইসঙ্গে শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুলিপাড়াকে কেন্দ্র করে কন্টেইনমেন্ট জোন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এদিন ১ নম্বর ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি পাড়াতেই জীবাণুনাশক স্প্রে করে পুরসভা। পাশাপাশি পুলিসের উপস্থিতিতে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুলিপাড়ার আশপাশের কয়েকটি রাস্তা বাঁশ দিয়ে সিল করেছেন পুরকর্মীরা। কারণ ওই শ্রমিক সংশ্লিষ্ট এলাকাতেই ছিলেন। এদিন বিকেল পর্যন্ত প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেন, এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এবার পুলিস, স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করার পর ওই এলাকাকে কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে প্রশাসন ঘোষণা করবে। তা ঘোষণা হওয়ার পর শহরে কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে তিনটি।