বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
তিস্তা থেকে শুরু করে সংকোশ পর্যন্ত ডুয়ার্স এলাকায় ২০০টির বেশি ছোটবড় রিসর্ট রয়েছে। এছাড়াও ১০০’র বেশি হোমস্টে আছে। এ সময়টাই পর্যটনের ভরা মরশুম। প্রচুর মানুষ ডুয়ার্সে বেড়াতে আসেন। কিন্তু করোনার জেরে লকডাউন চলছে। তাই সব কিছুই বন্ধ। অথচ এ সময়ে আসা পর্যটকদের উপরে ভরসা করেই বছরের অনেকটা সময় চলে রিসর্ট মালিকদের।
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তথা লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, করোনার কারণে ডুয়ার্সের পর্যটনশিল্পে সরাসরি আঘাত লেগেছে। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত এখানে প্রচুর পর্যটক আসেন। স্কুল, কলেজের পরীক্ষা শেষ ও ছুটির কারণে পর্যটকের ভিড় থাকে। এই তিনমাসের ব্যবসা দিয়ে এরপরের বন্ধ বা পুজোর সময়টা পর্যন্ত অনেকটা উঠে আসে। এবার লকডাউনের কারণে তা পুরোটাই বন্ধ হয়ে গেল। এখন যা পরিস্থিতি তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রায় আটমাস এখানে পর্যটন ব্যবসা কার্যত বন্ধই থাকবে। এর ফলে প্রায় ৭২০ কোটি টাকা সরাসরি ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। অপ্রত্যক্ষ ক্ষতি ধরলে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক তথা জলদাপাড়া লজ ওনার্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য সঞ্জয় দাস বলেন, এই এলাকার অর্থনীতি পর্যটনের উপরে নির্ভরশীল। লকডাউন ও এরপর জঙ্গল বন্ধ থাকার করণে পর্যটক আর আসবেই না। সরকারকে পর্যটন শিল্পের এই সমস্যার কথা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। এখানকার ব্যবসায়ীদের বিকল্প আয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। কর্মীদেরও কোনও বিকল্প আয় নেই।
তিস্তা থেকে শুরু করে সংকোশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় যে রিসর্ট ও হোমস্টেগুলি রয়েছে তার উপরে সরাসরি নির্ভরশীল প্রায় ৭২ হাজার মানুষ। এছাড়াও অপ্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। লকডাউনের কারণে সকলেই সমস্যায় পড়েছেন। এখানকার পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে লকডাউনের কারণে ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এরপর জুন মাসের ১৬ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত জঙ্গল পর্যটকদের জন্য প্রতিবারের মতো এবারেও বন্ধ থাকবে। বন্যপ্রাণীদের প্রজননের জন্য ওই সময়ে জঙ্গল বন্ধ থাকে। পাশাপাশি বর্ষা থাকার কারণে পর্যটক আসে না। এরপরেই পুজো। সেই সময়েও পর্যটক থাকে না। পুজো পার হওয়ার পর আবার পর্যটক আসা শুরু হয়। ফলে এক টানা প্রায় আটমাস পর্যটন শিল্পে ভাটা চলবে। আটমাসে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৭২০ কোটি টাকায়। এছাড়াও এই সমস্ত রিসর্টগুলিতে যাঁরা মাছ, মাংস সরবরাহ করেন, পর্যটকদের জন্য গাড়ি দেন তাঁরাও অপ্রত্যক্ষভাবে এরসঙ্গে জড়িত। সব মিলিয়ে এখানে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা। স্বাভাবিকভাবেই প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।