বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সোমবার কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব ও রাসমেলার উদ্বোধন হয়। কোচবিহার পুরসভা পরিচালিত রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক পাননি নিশীথ। কোচবিহারের সংসদ সদস্য রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক না পাওয়াতে বিষয়টি ঘিরে বির্তক দানা বেঁধেছিল। পাশাপাশি এই ঘটনায় বিজেপিও যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়। এরই মাঝে মঙ্গলবার বিজেপির জেলা কার্যালয় থেকে ৪০ জন ঢাকি নিয়ে রীতিমত ঢাক বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে মদনমোহন মন্দিরে এসে পুজো দেন নিশীথ।
কোচবিহারের সংসদ সদস্য হওয়া স্বত্ত্বেও কেন রাসমেলায় তাঁকে ডাকা হল না? এই প্রশ্নের জবাবে নিশীথ বলেন, কোচবিহারের রাজবংশের কুল দেবতা আমাদের প্রাণের ঠাকুর মদনমোহন। রাজ আমলের মতোই স্বর্ণ, রৌপ্য, ফল-মূল দিয়ে পুজো দেওয়া হয়েছে। রাসচক্র ঘুরিয়ে কোচবিহারবাসীর জন্য মঙ্গল কামনা করেছি। জেলার মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করাটাই প্রধান বিষয়। তাতে কে আমাকে আমন্ত্রণ জানালো বা না জানালো তাতে কিছু যায় আসে না।
রাসমেলায় আমন্ত্রণ না জানানো সংকীর্ণ রাজনীতির পরিচয় কিনা, তা জানতে চাওয়া হলে সংসদ সদস্য বলেন, কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তাঁর দলীয় নেতৃত্বের আদেশেই আমাকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেননি। শিষ্টাচার তাঁদের না জানা থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের জানা আছে। আগামী বছর নিশ্চয় আমরা তাঁদের আমন্ত্রণ জানাবো। মদনমোহন যাঁদের কুলদেবতা, অর্থাৎ যাঁরা রাজবংশী সম্প্রদায়ভুক্ত, এখানকার ভূমিপুত্র, আগামী বছর থেকে যাতে তাঁদের মাধ্যমেই মদনমোহনের পুজোর শুভারম্ভ হয়, সেই চেষ্টা আমরা করছি।
নিশীথকে কেন রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হল না, এই প্রশ্নের উত্তরে সোমবার রাতেই কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসের ভূষণ সিং বলেছিলেন, আমরা কাকে আমন্ত্রণ জানাবো তা দলীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ঠিক হয়। আমি দলের বাইরে নই। দলেরই সিদ্ধান্ত যে বিজেপির সংসদ সদস্যকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। দলের এই বার্তা আমাকে মানতেই হয়েছে।
ভূষণবাবুর এই মন্তব্যকে ঘিরে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে সংসদ সদস্য কোনও দলের হন না। তিনি তাঁর কেন্দ্রের সমস্ত মানুষেরই প্রতিনিধি। রাসমেলাও সমস্ত মানুষের মেলা। কোচবিহার পুরসভাও কোনও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়। তাহলে কেন এখানে দলের প্রশ্ন আসছে?
বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায় বলেন, এঁরা রাসমেলার মধ্যেও রাজনীতি টেনে আনলেন। দু’শো বছরের রাজ ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। মেলা মানে তো সব কিছুর উর্ধ্বে। পশ্চিমবঙ্গ, নিম্ন অসম, ভূটান, বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ এই মেলায় অংশ নেন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তিনি এই কেন্দ্রের সমম্ত মানুষের সংসদ সদস্য। কিন্তু তাঁকে বিজেপির এমপি বলে তকমা দেওয়া হয়েছে। এটা কোচবিহারের মানুষকে আহত করেছে। আমরা এই বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছিল। বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক বিপুল ভোটে জয় লাভ করেছিলেন। রাসমেলার অনুষ্ঠানে তিনি ডাক না পাওয়াতে বির্তক শুরু হয়েছিল। কিন্তু এদিন মাথায় পাগড়ি বেঁধে, জহর কোট গায়ে দিয়ে জাঁকজমকভাবে মদনমোহন মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে তারই যেন জবাব দিলেন একদা তৃণমূলের এই তরুণ তুর্কি নেতা।