বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মৃৎশিল্পী শিবশঙ্কর পাল বলেন, এই জীবিকায় লাভ খুব বেশি হয় না। তাই এখন আমি স্বর্ণকারের কাজ করি। দীপাবলিতে প্রদীপের কদর কিছুটা বাড়ে তাই কয়েকদিন বাড়িতে প্রদীপ তৈরির কাজ করছি। ফুলেশ্বর পাল বলেন, শ্রমের টাকাটাই কোনওক্রমে ওঠে। পূর্ব পুরুষদের জীবিকা ধরে রাখতেই এখনও পুজোতে ব্যবহৃত প্রদীপ সহ বিভিন্ন মাটির সরঞ্জাম তৈরি করি। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই চায়না টুনি বাল্ব ব্যবহার দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক পরিবার চায়না বাল্ব দিয়েই বাড়ি আলোকিত করে কিন্তু নিয়মের জন্য মাটির প্রদীপ ক্রয় করে। সরকারি কোনও সহায়তা আমরা পাই না। মৃৎশিল্পী সান্ত্বনা পাল বলেন, বাড়ির পুরুষ মহিলা সকলে মিলে এই কাজ করে থাকি। স্থানীয় মাটি দিয়ে কাজ হয় না। বাইরে থেকে মাটি কিনে আনতে হয়। খুব বেশি লাভ হয় না। শুনেছি মৃৎশিল্পীদের জন্য সরকার অনেক সুযোগসুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা আজ পর্যন্ত পাইনি। অপর এক মৃৎশিল্পী রামপদ পাল বলেন, লাভ তেমন কিছুই হয় না, তাই এবার আমরা প্রদীপ তৈরি করিনি।
শিল্পীরা বলেন, চায়না বাল্বের ব্যবহার এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু নিয়ম অনুসারে মাটির প্রদীপ নিতেই হয়। চায়না বাল্বে বাড়ি সাজালেও ঠাকুরের চরণে মাটির প্রদীপই দেয় সকলে। তাই মাটির প্রদীপের চাহিদাও আছে। কিন্তু শুধু প্রদীপ তৈরি করে পুড়িয়ে বাজারে নিলেই হয় না। চাহিদা আনুসরে তাতে বিভিন্ন নকশা ও সেসঙ্গে রং করে প্রদীপকে আগের তুলনায় অনেক সুন্দর করে তুলতে হচ্ছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে উন্নতমানের প্রদীপ তৈরিতে খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু প্রদীপ নয়, পুজোতে ব্যবহৃত সড়া, ঘট, ধুনচি সহ মাটির সমস্ত সরঞ্জামেই কিছু না কিছু নতুনত্বের ছোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। কাজকে আরও সুন্দর করতে সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ ও বিক্রির জন্য উপযুক্ত বাজার এবং লোনের সুবিধা পেলে এই শিল্প আরও উন্নত হতে পারবে।
স্থানীয়রা বলেন, সামনেই কালীপুজো আর এই পুজোকে কেন্দ্র করেই দীপাবলী। শহর কিংবা গ্রাম সর্বত্রই এলইডি আলোর বন্যায় ভাসবে। এই প্রতিযোগিতায় মাটির প্রদীপ কিছুটা পিছনে পড়লেও একেবারেই কদর হারায়নি। গ্রাম বাংলার এই হস্তশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আলোর উৎসবে মাটির প্রদীপ ব্যাবহারে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।