কাজল মণ্ডল, ইসলামপুর, সংবাদদাতা: সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রথম ধাপেই উত্তর দিনাজপুর জেলায় বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি। জেলার সমস্ত বুথে কমিটির নির্বাচন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এনিয়ে বিজেপির অন্দরেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর থেকে সাংগঠনিক নির্বাচন শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে বুথ কমিটির সভাপতি থেকে মণ্ডল ও জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচন হবে। ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বুথ কমিটির নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু জেলার বহু বুথে দল নির্বাচন করাতে পারেনি। সাংগঠনিক নির্বাচনের নিয়ম অনুসারে যে বুথে ২৫ জনের কম সদস্য থাকবে সেখানে নির্বাচন হবে না। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২০৭৬টি বুথ রয়েছে। তারমধ্যে ১৬২১টি বুথ কমিটির নির্বাচন হয়েছে। অর্থাৎ ৪৫৫টি বুথে নির্বাচন হয়নি। কার্যত ওই বুথগুলিতে বিজেপির হাতেগোনা কয়েকজন কর্মী আছে, কোথাও আবার নেই। নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, বাকি বুথগুলির কমিটি গঠনের জন্য রাজ্য থেকে সময়সীমা বৃদ্ধি করা হতে পারে।
বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, দলের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ হওয়ার পরেই সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুথ কমিটির নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তবে বেশকিছু এলাকায় সদস্য সংখ্যা কম থাকায় নির্বাচন হয়নি। তবে জেলায় এমন কোনও বুথ নেই যেখানে আমাদের কর্মী নেই। বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার নেতা কমল দেবনাথ বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর পরেই কয়েকদিন অতি বৃষ্টি ছিল। শেষের দিকে পুজো ছিল। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে সমস্ত বুথে নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। অতিরিক্ত সময় পেলে বাকি বুথগুলিতেও নির্বাচন করা হবে। বিজেপির চাকুলিয়া মণ্ডলের নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিশ্বনাথ মৃধা বলেন, আমরা এলাকায় ৭৬টি বুথের মধ্যে ৬৩টিতে নির্বাচন হয়েছে। বাকিগুলিতে ২৫ জনের কম সদস্য থাকায় নির্বাচন হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বুথ কমিটির নির্বাচন শেষ করার নির্দেশ ছিল। এরপর ৩১ অক্টোবরের মধ্যে মণ্ডল কমিটির নির্বাচন শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। বুথ কমিটির নির্বাচিত সভাপতিরাই মণ্ডল কমিটির নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। মণ্ডল কমিটির সভাপতিরাই জেলা কমিটির নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। ১৫ নভেম্বর জেলার সাংগঠনিক নির্বাচনের পদাধিকারীদের কলকাতায় বিশেষ মিটিং রয়েছে। ওই মিটিংয়ে বুথ নির্বাচনের সময়সীমা বাড়ানো কিংবা মণ্ডল ও জেলা কমিটির নির্বাচনের দিনক্ষণ পরিবর্তনও হতে পারে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, বিজেপি তাদের প্রাথমিক সদস্য সংখ্য চার লক্ষের বেশি বলে দাবি করছে। তা হলে জেলার সমস্ত বুথে তারা নির্বাচন করাতে পরল না কেন? এর মাধ্যমে দলের সাংগঠনিক ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে।