বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
পুজোর মধ্যে শিলিগুড়ি শহরের ২, ৩, ৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগ মারাত্মকভাবে ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়া ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক শিক্ষিকার মৃত্যুও হয়েছে। এর বাইরে ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডেও বেশ কিছু বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। নাগরিকরা এনিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত। এদিন কয়েকজন বাসিন্দা রোগ মোকাবিলার উপায় জানতে পূর্ব বিবেকানন্দপল্লিতে উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ ডাঃ তুলসি প্রামাণিকের অফিসে গিয়ে নাকাল হন বলে অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর এমন অভিযোগ মেলার পর দুপুরে সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ম্যালেরিয়া রক্ত পরীক্ষা ও চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রের দরজায় ঝুলছে তালা। সেই দরজায় সাঁটানো ডেঙ্গু রোগ সংক্রান্ত সতর্কবার্তা দেওয়া পোস্টার। পাশের করিডর দিয়ে অফিসে ঢুকে দেখা যায়, চেয়ারে বসে রয়েছেন তিনজন কর্মী। দু’জন পুরুষ ও একজন মহিলা। ডেঙ্গু রোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, এ ব্যাপারে যা বলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ বলবেন। তবে তিনি এখন ছুটিতে রয়েছেন।
স্বাস্থ্যদপ্তরের এমন অবস্থা নিয়ে শিলিগুড়ির নাগরিকদের একাংশ রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, দশমীর তিনদিন পরও স্বাস্থ্যদপ্তর পুজোর ছুটির আমেজ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। মশাবাহিত ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারি চালানো, পরামর্শ প্রদান, সতর্কতামূলক অভিযান চালানোর দায়িত্ব উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২-এর। মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২এর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। হোয়টসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েও তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ প্রলয় আচার্য অবশ্য বলেন, উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ ছুটিতে থাকলেও পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা সচেতন রয়েছেন।
অন্যদিকে, ডেঙ্গু মোকাবিলায় নাগরিকদের সচেতন করতে আরও জোর দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভা। এদিন পুরসভার মেয়র পরিষদ সদস্য(স্বাস্থ্য) শঙ্কর ঘোষ বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। কখনও ব্যাপক বৃষ্টি, আবার কখনও রোদ ওঠে। এমন আবহাওয়ার জেরেই ২, ৩, ৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। পুরসভায় পতঙ্গবিদ থাকলে এই সময় ডেঙ্গু বাড়ার কারণ সম্পর্কে আরও স্পষ্টভাবে তথ্য জানা যেত। তাই রাজ্য সরকারের কাছে পুরসভায় পতঙ্গবিদ নিয়োগ করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
মেয়র পরিষদ সদস্য আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এবং সিটিজেন টাস্ক ফোর্স, ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের রিপোর্ট অনুসারে জানা যাচ্ছে, একই বাড়ির একাধিক সদস্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর থেকেই মনে হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট বাড়ির কলতলা, বাথরুম, ফুলগাছের টব, ছাদ এবং আশপাশ এলাকার জমা জলে ডেঙ্গুর বাহক মশা বাসা বানাচ্ছে। এই সমস্যা দূর করতে বাড়ি বাড়ি অভিযানে জোর দেওয়া হয়েছে। তবে, ডেঙ্গু নিয়ে ঘাবড়াবার কিছু নেই। পুরসভার ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো বলেন, মশার লার্ভা নিধনের জন্য অনেক বাড়িতে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। এব্যাপারে নাগরিকদের সহযোগিতা দরকার। তা হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হবে।