বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আমেরিকার সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি এই ওষুধ নিয়ে আশাবাদী। ব্রিটেনের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাইমন ক্লার্কের ভাষায় মলনুপিরাভিরের প্রাথমিক ফলাফল উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো। তবে তথ্যের বিষয়টি যাচাই করে নেওয়া দরকার বলেও তিনি মনে করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার হর্বি আবার বলেছেন, মলনুপিরাভির কোভিড চিকিৎসায় দারুণ অগ্রগতির সংকেত দিচ্ছে। তবে এটি কতটা ভালো তা প্রমাণিত হবে, যখন গবেষণাগার থেকে বাইরের জগতে এসে এর প্রয়োগ শুরু হবে।
এখন প্রশ্ন হল, এই মলনুপিরাভির আসলে কী? এটি একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ। এর আবিষ্কারের কাহিনী খুঁজতে ফিরে যেতে হবে আরও প্রায় বছর আঠার আগে। আমেরিকার আটলান্টা শহরের একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় এমোরি পরিচালিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ড্রাইভে’র কাছে। ড্রাইভ মূলত একটি অলাভজনক বায়োটেক সংস্থা, যারা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করে। ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু নিজেরা ওষুধ আবিষ্কার করে না। বহু হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বাধীন গবেষণা সংস্থা নিজ উদ্যোগে নানারকম রোগ নিয়ে অনুসন্ধান করে। তাদের লক্ষ্যই থাকে এমন কোনও একটি উপাদান খুঁজে বের করা, যা সেই রোগের চিকিৎসায় কাজ করবে। তাদের কাছে যখন সেরকম কোনও উপাদান আশাব্যঞ্জক বলে মনে হয় তারা তখন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কারণ একটি ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতকরণে যে বিপুল কর্মযজ্ঞ ও অর্থের দরকার, তাদের সেই ক্ষমতা নেই। ফলে ওষুধ কোম্পানিগুলো চুক্তি করে এসব উপাদান নিয়ে কাজ করে। ড্রাইভও ঠিক এভাবেই কাজ করে। তারা ২০০৩ সালে এমন একটি পদার্থের সন্ধান পান যা কিনা বিভিন্নরকম আরএনএ ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করবে। কিন্তু এটি খাওয়ার যোগ্য ছিল না, এবং তারা দেখতে পান প্রাণীকোষে এর দ্বারা মিউটেশন ঘটতে পারে। ফলে সমস্ত তথ্য ডাটাবেসে রেখে তারা আর অগ্রসর হয়নি।
২০১৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স থ্রেট রিডাকশন এজেন্সি (যারা গণবিধ্বংসী অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করতে কাজ করে) ভেনেজুয়েলান এনকেফালাইটিস ভাইরাস একটি আরএনএ ভাইরাসের কার্যকরী প্রতিষেধক তৈরির দরপত্র আহ্বান করে। এই ভাইরাস জীবাণু অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগের ভয় ছিল। উৎসাহিত ড্রাইভের গবেষকরা এবার তাদের তথ্যকেন্দ্র ঘেঁটে দশ বছর আগের সেই উপাদানের সন্ধান পেলেন। তারা এর রাসায়নিক গঠনে কিছু পরিবর্তন আনলেন। ফলে এটি পরিণত হল প্রোড্রাগ নামে একটি বস্তুতে, যা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় মানবশরীরে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে এটি সক্রিয় হয়। এর সাংকেতিক নাম হয় EIDD-2801, যা আমরা এখন মলনুপিরাভির নামে জানি।