বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শুধু মায়ের স্মৃতিকথা নয়, বইটিকে তথ্যসমৃদ্ধ করে তুলতে সীমান্তের দু’পার (ভারত ও পাকিস্তান) নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন হুইলার। পাকিস্তানে দু’বার সফর করেছেন। ভারতেও গিয়েছেন বেশ কয়েকবার। তিনি কথা বলেছেন, তাঁর মায়ের দিকের দিল্লি ও মুম্বইয়ে বসবাসকারী আত্মীয়দের সঙ্গে। দেশভাগের আগের ইতিহাস, ফেলে আসা ভিটেমাটি-সম্পত্তি, দীপ সিংয়ের ছিন্নমূল হওয়ার কাহিনী নতুন আঙ্গিকে বইটিতে তুলে ধরেছেন হুইলার। ২০১৭ সালে ভারত যখন তার ৭০ বছরের স্বাধীনতা দিবস পালন করছে, তখন বইটির বীজ বপন করেছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল, নিজের ভারতীয় শিকড় খুঁজে বের করা। আর সেকারণেই লেখিকার আশা, তাঁর ‘দ্য লস্ট হোমস্টেড’ বই বাজারে আসামাত্রই ঝড় তুলবে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভারতের বাজারে আসছে বইটি।
কিন্তু, দেশভাগের যন্ত্রণার কাহিনী দুই মলাটের মধ্যে তুলে ধরা হুইলারের কাছে সহজ ছিল না। তিনি যখন বই লিখছেন, তখন চার্লস হুইলার ও দীপ সিংহের মানবাধিকার-আইনজীবী মেয়েটির জীবনে ঝড় বইয়ে গিয়েছে। শরীরে ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে। কিন্তু, তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ব্রিটেনের তৎকালীন বিদেশ সচিব বরিস জনসনের সঙ্গে ২৫ বছরের বিয়ে ভেঙেছে। ১৯৯৩ সালে বরিসের সঙ্গে চারহাত এক হয়েছিল হুইলারের। ২০১৮ সালে তাঁর বিয়ে ভাঙলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে খোরপোশ সংক্রান্ত আর্থিক সমস্যার সমাধান হয়েছে। আর বিচ্ছেদের ফেব্রুয়ারিতেই হুইলার হারিয়েছেন তাঁর মাকে।
আইটিভিতে অনুষ্ঠিত ‘গুড মর্নিং ব্রিটেন’ অনুষ্ঠানে নিজের বই সম্পর্কে হুইলার বলেছেন, ‘ক্যান্সার, বিবাহবিচ্ছেদের মতো কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেলেও বইয়ের বিষয়বস্তু থেকে বিচ্যুত হইনি। অনেকের জীবনেই এই ধরনের সমস্যা আসে। তবে, আমার ক্ষেত্রে এসবই হয়েছে অত্যন্ত স্বল্প সময়ের ব্যবধানে।’ যদিও, তাঁর প্রাক্তন স্বামী সম্পর্কে একটিও মন্তব্য করেননি তিনি। দীপ সিংয়ের স্মৃতিচারণ করে হুইলার বলেছেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সে মাকে তাঁদের দিকের পাঞ্জাব ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। ঘর-বাড়ি, ভিটেমাটি ছেড়ে ছোট্ট দীপকে নিয়ে দিল্লিতে উঠে এসেছিলেন দাদু।
যদিও, দাদু সম্পর্কে লেখিকার কিছুই স্মরণে নেই। হুইলারের কথায়, ‘আমি কোনও ভারতীয় ভাষা জানি না। আমার মা সচেতনভাবেই তা শেখায়নি। পুরনো ঐতিহ্য সম্পর্কে আমার সবটাই অজানা। আর আমি সেটাই খুঁজে বের করা চেষ্টা করেছি।’ দেগভাগের দগ্ধ অভিজ্ঞতা কখনই কাউকে শেয়ার করেননি তাঁর মা। আর যখন সেদিনের গল্প মেয়েকে বলেছেন, তখন দীপ সিং স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছিলেন। বিশেষ করে সরগোধায় তাঁর ফেলে আসা বাড়ি সম্পর্কে। হুইলারের কথায়, ‘আঙুরের বাগানের মধ্যে দিয়ে মায়ের ছোটবেলায় হেঁটে যাওয়ার কথা মনে রয়েছে। তবে, দেশত্যাগের স্মৃতি খুব আবছা। উনি কখনই সেখানে ফিরে যেতে চাননি। পরিবারের কোনও সদস্যও সরগোদায় যাননি।’ প্রসঙ্গত, হুইলারের বাবা বিশিষ্ট সাংবাদিক স্যার চার্লস হুইলার। বিবিসি সংবাদমাধ্যমের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া করেসপনডেন্ট হিসেবে দিল্লিতে পোস্টিং থাকাকালীন দীপের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। সেখান থেকেই তাঁদের ঘনিষ্ঠতা এবং বিয়ে।