বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
নিজামুদ্দিন প্রসঙ্গে এদিন নবান্নে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শীর্ষ পুলিসকর্তাদের নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লার সঙ্গেও তিনি টেলিফোনে কথা বলেন। ট্যুইটারে পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাঁরা দিল্লির ওই ধর্মীয় সভায় গিয়েছিলেন তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে এবং বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন রাজ্যের প্রথম সারির এক মন্ত্রী। বিদেশ থেকে আসা বা এই ধরনের সভায় যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি এই অনুষ্ঠানটি হয় দিল্লির পশ্চিম নিজামুদ্দিনে। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২ হাজার ১৩৭ জন যোগ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বেসরকারি মতে তা প্রায় ৭-৮ হাজার। ২০টি রাজ্যের বাসিন্দাদের পাশাপাশি ছিলেন ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া সহ প্রায় ১৬টি দেশের নাগরিকরাও। পর্যটক ভিসার শর্ত ভেঙে ধর্মীয় সভায় যোগ দেওয়া ২৮১ জন বিদেশিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর। এর মধ্যে ৭২ জন ইন্দোনেশিয়া, ১৯ জন বাংলাদেশ এবং ৩ জন ব্রিটেনের নাগরিক রয়েছেন।
এই ঘটনায় কারও দোষ না দেখে এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। পশ্চিম নিজামুদ্দিনের অধিকাংশ এলাকাই ঘিরে রয়েছে পুলিস। সেখানকার বস্তিতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বাস রয়েছে। এদিন বিকেলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, ‘ওই ধর্মীয় সভায় যোগ দেওয়া ৪৪১ জনের দেহে উপসর্গ দেখা গিয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।’ তাঁর আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে এদিনই নিজামুদ্দিনের মৌলানা সাদ এবং তবলিগের অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এপিডেমিক ডিজিজ অ্যাক্ট, ১৮৯৭ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিস। তারা অবশ্য আইএস জঙ্গি যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। কেজরিওয়াল আরও জানিয়েছেন, দিল্লিতে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৪১ জন বিদেশ ঘুরে এসেছেন এবং ২২ জন তাঁদের আত্মীয়। ২৪ জন নিজামুদ্দিনের ওই ধর্মীয় সভায় যোগ দিয়েছিলেন এবং ১০ জনের সংক্রমণের উৎস জানার চেষ্টা চলছে। এখনও স্থানীয় গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি। তবলিগের ১ হাজার ৩৩৯ জন কর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর।
যে যে রাজ্য থেকে নিজামুদ্দিনের সভায় সবথেকে বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, সেগুলি হল – তামিলনাড়ু (১৫০০ জন), অসম (২১৬ জন), উত্তরপ্রদেশ (১৫৬ জন), মধ্যপ্রদেশ (১০৭ জন), বিহার (৮৬ জন)। মহারাষ্ট্র থেকে ১০৯ জন। তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে। নিজামুদ্দিন কাণ্ডে নজরদারি চালাতে করোনা প্রভাবিত জেলা সফর কাঁটছাঁট করে লখনউ ফিরে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
মহামারীর মধ্যেই কী করে বিপুল সংখ্যক জমায়েত করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও তবলিগ-ই-জামাতের আন্তর্জাতিক সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও আইন ভাঙা হয়নি। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইন পরিষেবা খোলার প্রস্তাবও দিয়েছে তারা।