বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
লোকসভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি আগামীকাল লোকসভায় পেশ করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এবং তিনি তা পাশের জন্য উদ্যোগও নেবেন। বিলে সংশোধনী জমা করতে চাইলে সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে তা করা যাবে বলে বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধীদের যাতে কোনও অভিযোগ না থাকে, সে কথা মাথায় রেখেই সংসদে পেশ হওয়ার তিনদিন আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে এমপিদের কাছে বিলের কপি পৌঁছে গিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত এবং কাশ্মীরের স্পেশাল স্ট্যাটাস বিলোপ করতে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল বিলের ক্ষেত্রে গত ৫ এবং ৬ আগস্ট সংসদে যা হয়েছিল, তা এড়াতেই এই ব্যবস্থা বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। কাশ্মীর দ্বিখণ্ডিত বিলের ক্ষেত্রে সংসদে বিল পেশ বা পাশ হবে, তা কাকপক্ষীকে টের পেতে দেয়নি মোদি সরকার। যা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল বিজেপিকে। সেই পরিস্থিতি ফের তৈরি হোক, এমনটা চান না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাকতালীয়ও বটে, মোদি সরকারের এই নাগরিকত্ব সংশোধনীটি হল ২০১৯ সালের ৩৭০ তম বিল!
যদিও ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনকে সরকার যেভাবে সংশোধন করতে চাইছে, তা বড় ভুল বলেই বিরোধীদের দাবি। বিলটিকে সংবিধান বিরোধী বলেও তকমা দিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার যে প্রস্তাব বিলে রয়েছে, তা সংবিধান বিরোধী বলেই মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়ান। পাশাপাশি ‘বেঙ্গল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেগুলেশন ১৮৭৩’ মোতাবেক উত্তর-পূর্ব ভারত সহ ষষ্ঠ শিডিউলের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় যে ‘দ্য ইনার লাইন’ ব্যবস্থা রয়েছে, তা অটুট রাখা হচ্ছে।
তাহলে একই দেশে দু’টি নিয়ম কেন কার্যকর হবে, এই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৯’ অনুযায়ী, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে ধর্মের ভিত্তিতে নিপীড়িত হয়ে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যদি ভারতে এসে নাগরিক হতে চায়, তবে তার সুযোগ করে দেবে ভারত সরকার। ছ’পাতার বিলে বিরোধীদের মূল আপত্তি এখানেই। তাদের প্রশ্ন, নাগরিকত্ব পেতে কেন ধর্মকে ভিত্তি করা হবে? কেনই বা স্রেফ উল্লেখ থাকবে তিনটি রাষ্ট্রের?
সংশোধনী চেয়ে সিপিএম দাবি করেছে, ধর্মের অংশটি বাদ দিতে হবে। একইসঙ্গে স্রেফ তিন রাষ্ট্র নয়। প্রতিবেশী দেশ বলতে হবে। অন্যদিকে, এই বিলের কোথাও এনআরসির কথা বলা না থাকলেও তৃণমূলের দাবি, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের আড়ালেই বিজেপি গোটা দেশে এনআরসি কার্যকর করতে উদ্যোগ নেবে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রবল বিরোধিতা করতে তৈরি তৃণমূল। লোকসভা হোক বা রাজ্যসভা, বিলটি যে আটকানো যাবে না, সে ব্যাপারে বিরোধীরা একপ্রকার নিশ্চিত। তা সত্ত্বেও বিরোধিতার পারদ চড়ানোয় যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেটাই এখন লক্ষ্য কংগ্রেস-তৃণমূলের।