সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর: ১৩৪ বছরের রামমন্দির-বাবরি মসজিদ জমি বিতর্ক কি অবশেষে কাটতে চলেছে? গতকালই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১৭ নভেম্বরের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে জমির অধিকার সংক্রান্ত মামলার রায়। অর্থাৎ ২.৭৭ একর জমির অধিকার কার হাতে যাবে কিংবা সেই জমির বন্টন হবে কি না ইত্যাদি বিষয় স্পষ্ট হয়ে যাবে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে। এক দিকে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের অপেক্ষা এবং অন্য দিকে অযোধ্যা মামলায় অন্যতম আবেদনকারী সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের কোর্ট বহির্ভূত কমিটিকে অধিকার ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। গতকালই জানা গিয়েছিল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড সম্ভবত সুপ্রিম কোর্ট গঠিত বিশেষ কমিটিকে প্রস্তাব দিয়েছে যে, ওয়াকফ বোর্ড ওই জমির অধিকার ছেড়ে দিতে রাজি এবং সরকার জমি অধিগ্রহণ করুক এই প্রস্তাবে কোনও আপত্তি নেই। তাদের। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী শাহিদ রিজভি আজও বলেছেন, যে প্রস্তাবটি মধ্যস্থতকারী কমিটির রিপোর্টে দেওয়া হয়েছে, সেটি বস্তুত সব পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে। হিন্দু ও মুসলিম উভয়ের কাছেই হবে উইন উইন। কারও আপত্তি হবে না বলে আমরা নিশ্চিত। যদিও বিস্তারিত প্রস্তাবের কথা কিংবা রিপোর্টে কী আছে, সেটা বলেননি তিনি। এ কথা বললেও প্রশ্ন উঠছে, এতদিন কেন শুনানির সময় ওয়াকফ বোর্ড এই প্রস্তাবের কথা বলেনি? সুপ্রিম কোর্টের মামলার শুনানি গতকাল ৪০ দিন পর সমাপ্ত হয়েছে। এই শুনানির পাশাপাশি অযোধ্যার সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আদালতের বাইরে মীমাংসার জন্য একটি কমিটি গঠন করে সর্বোচ্চ আদালত। সেই কমিটি জানিয়ে দিল যে তারা কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। তবে বিভিন্ন প্রস্তাব, মতামত, সুপারিশ তারা জমা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে এবং সামগ্রিক ৪০ দিনের শুনানি শুনে সুপ্রিম কোর্ট রায় দান করবে। তবে প্রশ্ন উঠছে যদি সত্যিই ওয়াকফ বোর্ড সরকারের জমি অধিগ্রহণে আপত্তি না করে জমির অধিকার ছেড়ে দেয়, তা হলে সেখানে এরপর কি রামমন্দির নির্মাণ করা হতে পারে? ওয়াকফ বোর্ডের একটি অংশের দাবি অযোধ্যায় অন্য মসজিদগুলিতে সরকার সংস্কার করে দিক।
প্রশ্ন উঠছে এই আকস্মিক অবস্থানের কারণ কী? একবার অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ হয়ে গেলে অযোধ্যার ইস্যুই সমাপ্ত হয়ে যাবে বিজেপির অ্যাজেন্ডা থেকে। তার পর আর অযোধ্যা রাজনীতির ময়দানে কোনও ইস্যুই থাকবে না। সেটাই কি লক্ষ্য ওয়াকফ বোর্ডের? যদিও এই অবস্থান বাকি মুসলিম আবেদনকারীরা মেনে নেবে কিনা সবথেকে বড় রাজনৈতিক প্রশ্ন এটাই। এখন থেকেই রামমন্দির নিয়ে আবার তৎপরতা শুরু হয়েছে। রাম জন্মভূমি ন্যাস, নির্মোহি আখড়া এবং হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে অযোধ্যায় জানানো হয়েছে যে, তারা আশা করছে এবার একটা বড়সড় সুসংবাদ আসতে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার ও কেন্দ্র নতুন করে অযোধ্যায় নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে। ১৪৪ ধারায় জারি হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।