মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিশেষ শুভ, উপার্জন বাড়বে দ্রুত। কারও কথায় কাজ করে বিপদে পড়তে ... বিশদ
প্রাথমিক থেকে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক, গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তভার রয়েছে এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে। তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, একাধিক ক্ষেত্রে ওএমআর শিটে নম্বর শূন্য থেকে বেড়ে ৫৩ হয়েছে। এদিন হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চেপে ধরেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কবে তদন্ত শেষ করবেন? দুর্নীতিতে পিছন থেকে মদত দিয়েছেন কারা? কারাই বা চক্রান্তকারী? বলছেন ওএমআর প্রভাবিত করা হয়েছে। তাহলে বলুন কারা এর পিছনে জড়িত? তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করেছেন? যাঁরা ওএমআর শিট বিকৃত করলেন, তাঁদের কি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? দুর্নীতিতে জড়িত বাকিরা কেন বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তাঁদের কেন ছেড়ে রাখা হয়েছে?’
সিবিআইয়ের তরফে উত্তরের অপেক্ষা পর্যন্ত করেননি বিচারপতি। আরও প্রশ্ন জুড়েছেন একইসঙ্গে—‘যাঁরা টাকা দিয়েছেন এবং যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না কেন? এখনও এত উদাসীন কেন সিবিআই? কী কারণে এত ঢিলেঢালা মনোভাব? এত দিনে তো অনেক টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে!’ এপ্রসঙ্গে রীতিমতো আক্ষেপের সুর শোনা যায় বিচারপতির গলায়। হতাশভাবে তিনি আরও বলেন ‘আপনারা যে ভাবে তদন্ত চালাচ্ছেন, তা চলতে পারে না। যা করার তাড়াতাড়ি করুন।’ সিবিআইয়ের আইনজীবী তখন বলেন, ‘এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। শুধু কিছু জন সুবিধা পেয়েছেন, বিষয়টা তেমন নয়। সেভাবে ধরাও হচ্ছে না। চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এটা পাবলিক স্ক্যাম। একটার সঙ্গে একটা যুক্ত করতে হচ্ছে।’
বিচারপতি বসু তখন বলেন, ‘কিছু সুবিধাভোগীকে গ্রেপ্তার করেছেন। চার্জশিট দিয়েছেন। কিন্তু বাকি সুবিধাভোগীদের ছেড়ে রেখেছেন। আপনারা কী করবেন আদালত তা বার বার বলে দেবে, এটা ভালো দেখায় না। নিজেদের কাজ নিজেরা করুন। কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, সেটাও বলে দিতে হচ্ছে। প্রতি দিন আসছেন আর কী করবেন সেই উপদেশ শুনে চলে যাচ্ছন। এটা চলতে পারে না। দ্রুত তদন্ত শেষ করুন। মামলা ঝুলে থাকার কারণে নিয়োগ শুরু করতে অসুবিধা হচ্ছে। এমন চললে শূন্যপদ বেড়েই চলবে।’
অন্যদিকে ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আইন অনুযায়ী অ্যাপটিটিউড টেস্ট ছিল কি না, জানতে চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের হলফনামা তলব করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন সেটি জমা পড়ে। তা খতিয়ে দেখে আদালত মনে করছে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘অ্যাপটিটিউড টেস্ট না নিয়েই হয়তো গড়ে একটা নম্বর দেওয়া হয়েছে।’ সেই কারণে ওই সময় ইন্টারভিউ নেওয়ার দায়িত্বে থাকা পদাধিকারীদের হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রথম দফায় আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি হুগলি, হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার এবং মুর্শিদাবাদের ইন্টারভিউয়ারদের হাজিরা দিতে হবে। ওই দিন রুদ্ধদ্বার এজলাসে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ড করবে আদালত।