বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
শুক্রবার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ছাত্রীর মৃত্যু হয়। দেহ ফেলে পালিয়ে যায় সান্ত্বনা-অভিজিৎ। মেয়েকে ভর্তির সময় তাঁরা বাড়ির ঠিকানাও ভুল দেন। ছাত্রীর মৃত্যুতে রহস্যের সূত্রপাত ঠিক এখান থেকেই। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেছিলেন তদন্তকারী চিকিৎসক। মৃত ছাত্রীর গলায় ও ঘাড়ে রাবার জাতীয় হাল্কা কিছু দিয়ে টান মারার দাগ দেখতে পাওয়া যায়। তাতে সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। এদিন পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে সান্ত্বনার বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। মূলত দু’টি প্রশ্নের উত্তর খোঁজাই তাঁদের এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এক, ছাত্রীর গলায় ও ঘাড়ের দাগটি কিসের? দুই, ভূত-ভীতিতে সে কেন এতটা অসুস্থ হয়ে পড়বে? কেনই বা ছাত্রীর মৃত্যুতে অলৌকিক কারণের উপর বেশি জোর দিচ্ছেন বাড়ির লোকেরা?
আপাতত এই দু’টি প্রশ্নকে ঘিরে একাধিক সম্ভাবনা উঠে আসছে। তবে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের চূড়ান্ত মতামতের উপরই তদন্তের পরবর্তী ঘুঁটি সাজাতে চাইছে পুলিস। প্রয়োজনে তারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে, ওই কিশোরী দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছিল। খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করতে চাইত না। এই কারণে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে সে। নাবালিকার দিদিমার দাবি, তাঁর এক ননদ বছর দশেক আগে মারা যান। তাঁর ছবি ঘরের দেওয়ালে টাঙানো ছিল। সপ্তাহ খানেক ধরে ওই ছবির দিকে বারবার তাকাচ্ছিল ওই ছাত্রী। মাঝে মাঝে ডুকরে কেঁদে উঠত। ভয়ে পেত। দিদিমার কথায়, ‘কোনও অলৌকিক বিষয় নাতনির উপর ভর করেছিল। শুক্রবার দুপুরে বাথরুম যায় নাতনি। সেখানে কোনও কিছু দেখে ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’ কিন্তু তাঁর এই বক্তব্য পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না অফিসাররা। তাঁদের প্রশ্ন, এতদিন পর কেন হঠাৎ করে ভয় পেতে শুরু করল ওই ছাত্রী? আগে কোনওদিন এভাবে ভয় পায়নি সে। তাহলে এই ভূত-ভীতি তত্ত্বের পিছনে কি অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে? সন্দেহ আরও বেড়েছে ছাত্রীর মায়ের প্রেমিককে ঘিরে। জানা গিয়েছে, সান্ত্বনা একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে কাজ করতেন। তখন থেকেই তাঁদের মধ্যে পরিচয়। বাড়িতেও শুরু হয় যাতায়াত। উভয়ের সম্পর্কে ওই ছাত্রী বাধা হতে পারে। এমন ধারণা থেকেই তাকে ভয় পাইয়ে মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, ভয়ের থেকে মানসিক চাপ বাড়ে। সেখান থেকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। নাবালিকার মৃত্যুর ক্ষেত্রে এরকম হয়তো কিছু ঘটেছিল। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে রাবার জাতীয় কিছু গলায় জড়িয়ে টান দেওয়া হতে পারে। এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিস।