বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
বিগত কয়েকমাসে জিএসটি ফাঁকির অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বিভাগের অফিসাররা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভুয়ো লেনদেন দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে টাকা। এই চক্রের দুই কিং পিন এখন হেফাজতে। একাধিক কাগুজে কোম্পানি তৈরি করে ভুয়ো ইনভয়েস জমা দেওয়া হচ্ছে সরকারের কাছে। তা দেখিয়েই সরকারের কাছ থেকে ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট বাবদ বকেয়া টাকা আদায় করা হচ্ছে। লোহা-ইস্পাত, কাগজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসায় এই প্রবণতা বেশি বলে নজরে এসেছে অফিসারদের।
শুধু তাই নয়, দেখা গিয়েছে, এই ধরনের ভুয়ো কোম্পানি যে বা যারা খুলছে, তাদের মধ্যে প্রিঅ্যাক্টিভেটেড সিম ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগের বলেই মনে করছেন অফিসাররা। কিন্তু কেন? কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসারদের কথায়, কোম্পানি খোলার পর জিএসটি নম্বর নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিতে হয়। তাতে কোম্পানির ঠিকানার পাশাপাশি ফোন নম্বরও লিখতে হয়। নিয়মানুয়াযী ফোন কোম্পানির নামে বা শীর্ষকর্তার নামে নেওয়া বাধ্যতামূলক। জিএসটি রিটার্ন জমা দেওয়া ও বকেয়া আদায়ের ক্ষেত্রে ওই মোবাইল নম্বরে একটি পাসওয়ার্ড যায়। অনলাইনে সেটি জানানোর পরই গোটা প্রক্রিয়াটি করা সম্ভব হয়। এই কাজেই ব্যবহার করা হচ্ছে প্রিঅ্যাক্টিভেটেড সিম। যা অন্যের নামে নেওয়া। ওই সিমের মালিককে কোম্পানির ডিরেক্টর হিসেবে দেখানো হচ্ছে। মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতে কোম্পানির হদিশ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কোম্পানির কোনও যোগই নেই। অনেক ক্ষেত্রে তার খোঁজও মিলছে না। এমনও দেখা গিয়েছে, সিমটি যাঁর নামে নেওয়া, তিনি অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। ফলে ভুয়ো কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মাঝপথেই থমকে যাচ্ছে তদন্ত।
কোথা থেকে আসছে প্রি অ্যাক্টিভেটেড সিম? কেন্দ্রীয় এই সংস্থার অফিসারদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন দোকানের সঙ্গে ভুয়ো কোম্পানির মালিকরা অনৈতিক গাঁটছড়া বেঁধেছে। সেখান থেকেই গোছা গোছা সিম তোলা হচ্ছে। যাতে একাধিক কোম্পানি খুললেও মোবাইল নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা না হয়। তার জন্য অবশ্য বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে ভুয়ো কোম্পানির মালিকদের। এক একটি সিম বিকোচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০র টাকায়। এই সিমগুলি অন্য কারও নথি দিয়ে তুলছে বিভিন্ন দোকানের মালিকরা। এমনকী এও দেখা গিয়েছে, কেউ আসল নথি দিয়ে সিম সংগ্রহ করার পর সেই নথিকে ব্যবহার করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তা দিয়ে তুলে নেওয়া হচ্ছে আরও একটি সিম। প্রথম ব্যক্তি জানতেই পারছেন না, তাঁর নামে দুটি সিম চলছে। কাগুজে কোম্পানিগুলি যাঁরা তৈরি করছে, তাঁদের সঙ্গে মোবাইলের দোকানদাররা একটি চক্র তৈরি করেছে। তা ভাঙাই এখন লক্ষ্য জিএসটি দপ্তরের অফিসারদের। তাই কোথায় কোথায় প্রিঅ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রি হচ্ছে, তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন তাঁরা।