নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যুব কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে তিনদিনের রাজ্য ছাত্রযুব বিজ্ঞান মেলা মঙ্গলবার শেষ হল। কলকাতা ও জেলাগুলি থেকে মোট ১৮৫টি স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রী বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর তাঁদের তৈরি মডেল প্রদর্শন করেন এই মেলায়। মঙ্গলবার বিভিন্ন স্তরে সেরা মডেলগুলিকে পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা, বিআইটিএসের ডিরেক্টর ভি এস রামচন্দ্রন, জগদীশ বসু ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট রিসার্চের অধিকর্তা মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য ও অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়। অরূপবাবু সহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মডেল প্রদর্শনীতে বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন। ট্রফি ছাড়া আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বিজয়ীদের। তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা ভাষণ দেন। বিজ্ঞান চর্চায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি অরূপবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে লক্ষ্যে অবিচল থেকে উঠে এসেছেন, তা ছাত্রছাত্রীদের কাছেও শেখার বিষয়। তাঁর এই বক্তব্যকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানায় ছাত্রছাত্রীরা।
সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় খালে ডলফিন ঢুকে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যের ঩সৃষ্টি হয়েছিল। একই ঘটনা ঘটেছিল হাওড়াতে। পূর্ব মেদিনীপুরের ডলফিনটি শেষ পর্যন্ত মারা যায়। বিজ্ঞান মেলায় স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পূর্ব মেদিনীপুরে মহিষাদল রাজ কলেজের দুই ছাত্রছাত্রীর এরকম ক্ষেত্রে ডলফিনকে রক্ষা করার যন্ত্রের মডেল পুরস্কৃত হয়েছে। প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ, নিকাশি প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্প, মশার লার্ভার নিয়ন্ত্রণ, কম খরচের হুইল চেয়ার, সব সময় ব্যবহৃত ছাতা, পরিবেশ সহায়ক স্যানিটারি ন্যাপ঩কিন প্রভৃতির মডেলও পুরস্কার জিতে নেয়।
যুব কল্যাণ দপ্তরের বক্তব্য, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনা তৈরি করার পাশাপাশি বিজ্ঞানকে প্রয়োগ করে জীবনের নানা সমস্যা মোকাবিলা করার পথ উদ্ভাবনের উদ্দেশ্যে এই মেলার আয়োজন করা হয়। প্রথমে ব্লক ও পুরসভা স্তরে এই মেলা করা হয়। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেয়। প্রতি জেলা থেকে প্রতি স্তরে প্রথম তিনটি স্থান পাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য স্তরের প্রদর্শনীতে ডাকা হয়েছিল তাদের মডেল প্রদর্শনের জন্য। কিন্তু যতগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডাক পেয়েছিল, তাদের সবাই এখানে অংশগ্রহণ না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন যুব কল্যাণ দপ্তরের এক আধিকারিক। বিশেষ করে কলেজ স্তরে অংশগ্রহণ না করার প্রবণতা বেশি। মোট ৭২টি কলেজের মডেল প্রদর্শনের কথা থাকলেও এসেছে ৫২টি। যুব কল্যাণ দপ্তর না আসার কারণ জানতে চাইবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কাছ থেকে।