বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি তাঁর ফোনে গোপনে নজরদারি চালাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার এমনই গুরুতর অভিযোগ করেছেন। এদিন রাজ্যপাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কী তথ্য আছে, তা তাঁর জানা নেই। রাজ্যে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যপালের দাবি, সরকারি আধিকারিক থেকে নানা স্তরের প্রতিনিধি তাঁর কাছে গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন। তাঁর মতে, এরাজ্যে ব্যক্তি গোপনীয়তার সঙ্গে আপস করা হয়। সম্প্রতি, হোয়াটসঅ্যাপ-এ নজরদারিতে এক বিদেশি সংস্থার নাম জড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন অধিকার আন্দোলন ও রাজনৈতিক কর্মী থেকে সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পাততেই ওই অ্যাপের উপর নজরদারি করা হচ্ছে। ওই বিদেশি সংস্থার দাবি, কেন্দ্রের নির্দেশেই তারা নজরদারি চালাচ্ছে। এই নিয়ে দেশজুড়ে চলতি বিতর্কের জেরে মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছিলেন। এদিন তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কী তথ্যের ভিত্তিতে ওই কথা বলছেন, তা তাঁর জানা নেই।
মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য সম্পর্কে রাজ্যপালের পাল্টা প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিত কারণেই ভালোভাবে নেয়নি তৃণমূল। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, সাংবিধানিক প্রধান হয়েও তিনি বিজেপি নেতার মতো আচরণ করছেন। সরাসরি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মতো রাজ্যপাল কথা বলছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পার্থবাবু। যদিও এটাই প্রথম নয়, এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘেরাওমুক্ত করতে গিয়েও ধনকার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তখনই তাঁর বিরুদ্ধে সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। পার্থবাবু বলেছিলেন, রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের পরামর্শ উপেক্ষা করেছেন রাজ্যপাল। তারপরেও মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে শিক্ষক পরিবারের খুনের ঘটনা নিয়ে পক্ষান্তরে রাজ্য প্রশাসনকে দুষে সেই বিতর্ক আরও উস্কে দেন ধনকার। তাঁর সেই মন্তব্য সাংবিধানিক লক্ষ্মণরেখা লঙ্ঘনের শামিল বলে জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূল মহাসচিব। রেড রোডের দুর্গা কার্নিভালে তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে নাম না করেই মমতাকে সমালোচনায় বিঁধেছিলেন। যদিও এইসব বিরোধের মধ্যে কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সস্ত্রীক রাজ্যপালের হাজিরায় সৌহার্দ্যের সম্ভাবনা দেখা গেলেও তা যে আদতে সংঘাতের তীব্রতা কমায়নি, এদিন দুই তরফের বাকযুদ্ধে তা প্রকট হল বলেই রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা। পার্থবাবু এদিন বলেছেন, ফোনে আড়িপাতা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন। কিন্তু তার পাল্টা হিসেবে বিরোধী দলের সুরে সুর মিলিয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান বলেন কী করে, প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের মহাসচিব।
শুধু মমতার মন্তব্য নিয়ে নয়, এদিন রাজ্য সরকারের কাজকর্ম নিয়েও কটাক্ষ করেছেন রাজ্যপাল। তাঁর ক্ষোভ, রাজ্য প্রশাসন তাঁকে কোনও কর্মসূচিতে ডাকে না। উল্লেখ্য, সম্প্রতি নবান্নকে এড়িয়ে ধনকার দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে গিয়ে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের ডাকা হলেও তাঁরা কেউই অংশ নেননি। এদিন রাজ্যপাল বলেন, আসন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর সৌজন্যটুকু দেখায়নি রাজ্য সরকার। এমনকী দীপাবলির শুভেচ্ছাও জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ঘটনাচক্রে তিনিই সম্ভবত দেশের একমাত্র রাজ্যপাল, যাঁকে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাননি।