নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যে বর্ষার আগমনের এখনও দেরি আছে। বর্ষা না আসা পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তীব্র গরমের হাত থেকে রেহাই মিলবে না। উপকূল সংলগ্ন ও কাছাকাছি এলাকায় ভ্যাপসা, অস্বস্তিকর গরম থাকবে। এইসব এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে দুই-তিন ডিগ্রি বেশি থাকবে। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি রেখেছে আবহাওয়া দপ্তর। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি ও স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি হলে তাপপ্রবাহ চলছে বলে মনে করা হয়। মঙ্গলবার রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি তাপমাত্রা (৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ছিল পুরুলিয়ায়। বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশে ছিল। কলকাতায় এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি বেশি।
উত্তর ভারতে এখন তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। কোনও কোনও জায়গায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শুকনো, গরম হাওয়া বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে দক্ষিণবঙ্গে ঢুকছে। এই কারণে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ দখিনা বাতাস ঢোকার জন্য কলকাতা এবং উপকূল সংলগ্ন এলাকায় চরম অস্বস্তিদায়ক ভ্যাপসা গরম চলছে। এখন যা অবস্থা তাতে বড়জোর জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কোথাও স্থানীয়ভাবে বজ্রমেঘ তৈরি হয়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু তাতে গরম থেকে স্বস্তি মিলবে না।
এখন দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হলে তাপমাত্রা কমে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। কিন্তু গুজরাত সংলগ্ন আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘বায়ু’ সৃষ্টি হওয়ার জেরে রাজ্যে বর্ষা আসার আরও দেরি হতে পারে। মৌসুমি বায়ুর জলীয় বাষ্প এখন আরব সাগরের উপর থাকা ঘূর্ণিঝড়টি টেনে নেবে। ফলে রাজ্যের দিকে বর্ষার যে স্রোতটি আসত, সেটি আপাতত থমকে যাবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বৃহস্পতিবার নাগদ অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়টি গুজরাতের ভেরাবলের কাছাকাছি কোনও জায়গায় আছড়ে পড়বে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। এই ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম ভারতে বর্ষাকে ঠেলে ঢুকিয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, উত্তুরে বর্ষারেখার একটি প্রান্ত এখন মিজোরামের উপর আছে। অন্যপ্রান্ত কেরল, তামিলনাড়ু পর্যন্ত এগিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে দূরে আছে বর্ষা।