নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট মেলার পর তা খতিয়ে দেখে সরকারি কর্মচারীদের যথাসাধ্য মাইনে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৩৪ বছরের বাম জমানার শেষে ক্ষমতায় আসার পরে প্রশাসনিক কাজে একাংশের অসহযোগিতা মিলেছে। এখনও তাদের অনেকেই সক্রিয়। আমরা কিন্তু প্রতিহিংসাপরায়ণ নই, কারও চাকরি যায়নি। তাঁর অভিযোগ, সিপিএম একদিকে যেমন নিজেদের ভোট বিজেপিতে স্থানান্তর করেছে, তেমনই আবার পে-কমিশন চাই, পে-কমিশন চাই বলে চিৎকার করছে। মমতা বলেন, পে-কমিশন আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছে। ওদের রিপোর্ট জমা পড়ুক, তারপর যতটা সামর্থ্য সেই অনুযায়ী ভাবব। কেউ বঞ্চিত হবে না। কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী সহ কতগুলো প্রকল্প সাধারণ মানুষের জন্য চালাতে হচ্ছে। এত কিছু বিনা পয়সায় দেওয়ার পর টাকার জোগাড় করতে হবে তো! এগুলো তো মানুষের ন্যায্য অধিকার। সে সব বাতিল করে তো আর দিতে পারব না! সাধ্যমতো দেব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি নিজেও একবার অভিরূপদা’কে (অভিরূপ সরকার, চেয়ারম্যান, ষষ্ঠ বেতন কমিশন) ডেকে নিয়ে কথা বলব। কতটা কী দিতে পারব, দেখে নেব। বড়সড় ঋণের বোঝা এবং তার সুদ আর আসল মেটাতে নাজেহাল অবস্থার পরেও যে সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মেটাচ্ছে রাজ্য, এদিন সে প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ বেতন কমিশন লাগু হওয়ার কথা ছিল গত ২০১৬ সালের পয়লা জানুয়ারি। বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে গত সাড়ে তিন বছর ধরে পরপর মেয়াদ বেড়েছে কমিশনের কার্যকালের।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মচারীরা এখন ১২৪ শতাংশ (আসলে তা ১২৫ শতাংশ) ডিএ পাচ্ছেন। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও টাকা জোগাড় করতে হচ্ছে। কর্মচারী সংগঠনগুলির বক্তব্য, রাজ্যের কর্মচারীরা ১২৫ শতাংশ ডিএ পেলেও, চেন্নাই ও দিল্লিতে কর্মরত এ রাজ্যেরই কর্মচারীরা এখন কেন্দ্রীয় হারে ১৫৪ শতাংশ ডিএ পান। অর্থাৎ কেন্দ্রের সঙ্গে এখনও রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ প্রাপ্তির ফারাক ২৯ শতাংশ। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, পে-কমিশন কার্যকর হলে, বকেয়া ডিএ’র পরিমাণ তাতে যুক্ত হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।