বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সিসিটিভির ফুটেজ বলছে সময়, সকাল ৫:৫৩। মূল মণ্ডপের বাঁ দিক থেকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। তারপর মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল ঐতিহ্যশালী এফডি ব্লকের পুজো মণ্ডপ। সল্টলেকের আকাশে তখন কালো ধোঁয়ার ঘনঘটা। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও আগুনের তীব্রতার কাছে হার মানতে হয়েছে দমকল বাহিনীর কর্মীদের। তার আগেই সব শেষ। বিসর্জনের প্রাক্কালে এমনই ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থাকলেন পুজোর উদ্যোক্তারা।
বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল সোয়া ছটা নাগাদ অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে বিধাননগর
দক্ষিণ থানার আধিকারিকরা এবং দমকল বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তবে ততক্ষণে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। মণ্ডপ এবং প্রতিমা প্রায় ভস্মীভূত। দমকলের দু'টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে নামে। খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান দমকলমন্ত্রী তথা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু। মন্ত্রী জানান, ঘটনার ফরেন্সিক তদন্ত প্রয়োজন। রিপোর্ট না-দেখা পর্যন্ত আগুনের উৎসস্থল বলা সম্ভব নয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল। ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেন। সেগুলি পরীক্ষা করে তাঁরা রিপোর্ট পেশ করবেন। সকালের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দুপুর বারোটা ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া স্তূপ থেকে ফের ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। দমকলের আধিকারিকরা জানান, চাপা ছাইয়ের মধ্যে কোথাও পকেট ফায়ার রয়ে গিয়েছে। সেখান থেকেই ফের ধোঁয়া দেখা দেয়। গোটা মণ্ডপ চত্বর ফের জল দিয়ে সম্পূর্ণ ঠান্ডা করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দ্বাদশীর সকালে আগুন যখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে তখন ব্লকের সংশ্লিষ্ট মাঠে ছাইয়ের পুরু আস্তরণ ছাড়া আর কিছুই নেই। মণ্ডপের কাঠামো নির্মাণের জন্য যে কাঠের গুঁড়ি ব্যবহার করা হয় সেগুলিতে ফাটল ধরেছে। এফডি ব্লক পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই অগ্নিকাণ্ড নিছকই দুর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, পুজোর প্রত্যেকদিন ভোর চারটের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বুধবার সকালেও তার অন্যথা হয়নি। বিষয়টি তদন্তের জন্য বিধাননগর দক্ষিণ থানায় এফডি ব্লক পুজো কমিটির পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুজো উদ্যোক্তাদের মতে, সিসিটিভিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মণ্ডপের বাঁদিক আগুনের উৎসস্থল। তবে সেখানে কোনও বৈদ্যুতিক সংযোগ নেই। বুধবার প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য মঙ্গলবার রাতেই বিদ্যুতের যাবতীয় সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তা হলে আগুন লাগল কী করে? কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, গত বেশ কয়েকটি পুজো ধরেই একদল মানুষ এফডি ব্লকের পুজো বন্ধ করা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। এই আগুন চক্রান্ত করে লাগানো কি না, তা ধন্দে ফেলেছে উদ্যোক্তাদের।ঘটনার যথাযথ তদন্ত দাবি করেছেন এফডি ব্লক পুজো কমিটির সদস্যরা।