বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
দেবদত্তা রায়। করোনা যুদ্ধে সামনের সারি থেকে লড়াই করা ডব্লুবিসিএস আধিকারিকের নামটা এখন রাজ্যবাসীর কাছে অজানা নয়। কিন্তু করোনার মতো রোগ দেবদত্তাকে আর চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়নি। আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুলাই মৃত্যু হয় তাঁর। শুধু তিনি নন, দেবদত্তার স্বামী, ছেলে এবং শাশুড়িও আক্রান্ত হন। তিনজনই দিন কয়েক আগে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এখনও চিকিৎসকের পরামর্শে গৃহবন্দি রয়েছেন। দমদমের লিচুবাগানের অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে এক নিস্তব্ধতার ছবি ধরা পড়ল। লেটার বক্সের উপরের সারিতেই জ্বলজ্বল করছে দেবদত্তা রায়ের নাম। চারতলায় ৪এ ফ্ল্যাট। দেওয়ালে লাগানো নেমপ্লেটে দেবদত্তা রায়ের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে সরকার পদবি। কোলাপসিবল গেটে শিকল দিয়ে ঝুলছে তালা। কলিং বেল বাজাতে স্বামী পবিত্র সরকার বেরিয়ে আসেন। স্ত্রীর কথা উঠতেই চোখের জল থামাতে পারেননি তিনি। খানিক চুপ করে থেকে তারপর বললেন, টানা তিন-চার মাস ধরে ওর লড়াই দেখেছি। শনি, রবিবারও সকাল বেলা বেরিয়ে গিয়েছে। সবসময়ই বলত মানুষের জন্য কাজ করছি, কিছুই হবে না। সুগার, প্রেসার, শ্বাসকষ্টের কোনও রোগ ছিল না। তবু সবাইকে ছেড়ে চলে গেল।
আকস্মিক এই মৃত্যু সরকার পরিবারকে তিলেতিলে দগ্ধ করছে। দেবদত্তার শাশুড়ি ষাটোর্ধ্ব, অসুস্থ। চার বছরের ফুটফুটে ছেলেটি ঘরে আপন মনে খেলা করছে। পবিত্রবাবু জানালেন, সকাল হতে না হতেই ও কাজে বেরিয়ে যেত। আর ফিরত অনেক রাতে। ছেলে তখন ঘুমিয়ে পড়ত। মায়ের বিষয়টি আমরা ওকে জানায়নি। এমনকী ঘরের যেখানে যেখানে দেবদত্তার ছবি ছিল, সব তুলে আলমারিতে রেখে দিয়েছি। সরিয়ে রেখেছি অ্যালবাম। একটি প্লে-স্কুলে পড়ে ছেলেটি, এখন স্কুল বন্ধ। আর বাইরে বেরনোও যাচ্ছে না। তাই টিভিতে কার্টুন আর ছেলেকে সঙ্গ দিয়ে দিন কাটছে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত দেবদত্তার স্বামীর। ঘরের কোনও জিনিসের প্রয়োজন পড়লে পরিচিত লোকজনরা গেটের বাইরে থেকে এসে দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এও জানালেন, দেবদত্তার পারলৌকিক কাজের জন্য পুরোহিতকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এখন আসতে পারবেন না, পরে যোগাযোগ করবেন।