বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আবার পুরকর্তারা এও মেনে নিচ্ছেন, টালিগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত কয়েকটি ওয়ার্ডের বেশ কিছু প্রত্যন্ত (সোনারপুর-রাজপুর পুরসভা লাগোয়া) এলাকা রয়েছে, যেখানকার রাস্তা এখনও খারাপ হয়ে রয়েছে। কোথাও আবার রয়েছে ইটের রাস্তাও। যেগুলি উন্নত পরিষেবা থেকে এখনও বঞ্চিত। সেখানকার বাসিন্দারা জানালেন, রাস্তার ধারে খোলা ড্রেন থেকে জল উপচে এই রাস্তাগুলির উপরে চলে আসে। তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। গর্তে জল জমে থাকলে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। বাইক বা অটোর চাকা গর্তে পড়লে, সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বিবেকানন্দ পার্কের এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, ভোট আসলে রাস্তায় পিচের প্রলেপ পড়ে। বাকি সারা বছরই অত্যন্ত খারাপ অবস্থা হয়ে থাকে। লাগোয়া কালীতলা পার্ক যাওয়ার রাস্তার পার্শ্ববর্তী অংশের বাসিন্দাদের কথায়, জলের লাইন বসানোর নামে যে কতবার খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছে, তা গুণে বলা যাবে না। খোঁড়াখুঁড়ি করলেও সেগুলি মেরামত করতেও সময় লেগে যায় বিস্তর। আবার ১১১, ১১২ এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডেও বেশ কিছু রাস্তা রয়েছে, যেগুলি নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ বিস্তর।
তবে সামগ্রিকভাবে এই এলাকাগুলি বাদ দিলে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশের রাস্তার অবস্থা নিয়ে নাগরিকদের মনে প্রশ্নের কোনও অবকাশ নেই। যেমন নিউ আলিপুরের ‘ও’ ব্লকের বাসিন্দা হৃষিকেশ চৌধুরী বললেন, আমাদের এলাকা উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকেদের বসবাস। এখানে সামান্য ‘পান থেকে চুন খসলেই’ অভিযোগের বহর বাড়তে থাকে। সেখানে রাস্তা নিয়ে এখানকার বাসিন্দাদের কোনও অভিযোগ নেই। আগে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট দিয়ে রাস্তা হতো। এখন তা বন্ধ। কিন্তু রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা উচিত নয়। নাকতলার অসীমা সেনগুপ্তই হোন বা চণ্ডী ঘোষ রোডের বাসিন্দা অনীতা সেনগুপ্তই হোন, সকলেই একবাক্যে বললেন, জল নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু রাস্তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। ভবানীপুরের চক্রবেড়িয়া রোডের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ গুহ সরকার বললেন, গাড়ি নিয়ে মসৃণভাবে যেতে পারি এলাকা দিয়ে। তাহলে রাস্তা খারাপ কীভাবে বলি!
গরচা ফার্স্ট লেনের বাসিন্দা অমিতাভ সরকার বললেন, রাস্তা নিয়ে অভিযোগ আমাদের আগে ছিল। কিন্তু সেই অভিযোগ এখন নেই বললেই চলে। যেটুকু খানাখন্দ, সেগুলিকে একেবারে গুরুত্ব না দিলেই চলে। আর এখন তো মেয়রের কাছে অভিযোগ জানানোর জায়গাও রয়েছে। কিছু হলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া যায়। দর্পনারায়ণ ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা অসিত দাসের কথায়, আমাদের এলাকার অন্যতম তীর্থক্ষেত্র কালীঘাট মন্দির। কিন্তু দিনের পর দিন এই রাস্তাগুলিকে তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন দেখুন, আলোয় সজ্জিত হয়ে রাস্তাগুলিও ঝকঝকে। তবে তিনি বললেন, রাস্তা সংস্কার হওয়ায় সেগুলি সবই প্রায় দখল হয়ে গিয়েছে। ফুটপাতও দখল। এগুলি নিয়ে পুরসভার ভাবনাচিন্তা করা উচিত। কাঁকুলিয়া রোডের প্রবীণ বাসিন্দা অনন্ত সেন বললেন, রাস্তা নিয়ে খুব অভিযোগ রয়েছে বলব না। কিন্তু আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এখন দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েকটি রাস্তা দেখেছি, যেগুলি নিয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ করা উচিত প্রশাসনের। কারণ, কোথাও কোথাও নিম্নমানের উপাদান দিয়ে রাস্তা তৈরি হয়। যেকারণে তৈরি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ভেঙে যাচ্ছে। আবার কলকাতার অনেক রাস্তাই দখল হয়ে গিয়েছে। যার জেরে মানুষ চলাচলও করতে পারেন না ঠিকমতো। এতে দুর্নীতিই ফুটে উঠছে। মেয়রকে বলব, এগুলির দিকে একটু নজর দিন।