বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
বীরেন্দ্রনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। অভিভাবক নন এমন কিছু যুবক স্থানীয় কৌশিক জানার নেতৃত্বে স্কুলে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। আমাদের একাধিক শিক্ষককে মারধর ও হেনস্তা করা হয়েছে। একদল শিক্ষার্থীর সামনে এভাবে হেনস্তা হতে হল ভাবতেও পারছি না। ওই ব্যক্তিদের দাবি ছিল, আমাদের শিক্ষকরা ঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না। আমরা বলি এনিয়ে অভিযোগ করার নির্দিষ্ট সরকারি দপ্তর আছে। সেখানে অভিযোগ করা যায়। কিন্তু তারা তা শোনেনি। পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমাদের একাধিক শিক্ষক অসুস্থ। গোটা বিষয় শিক্ষাদপ্তরকে জানানো হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, খুব ন্যক্কারজনক ঘটনা। কৌশিক জানা বিজেপির মণ্ডল সভাপতি ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপির পরাজয়ে ওরা হতাশ হয়ে এভাবে শিক্ষক পিটিয়ে নিজেদের সমাজসেবী প্রমাণ করতে চাইছে। বাংলার মানুষ দেখছে, এরা কোন সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে। আমরা ওই শিক্ষকদের পাশে আছি। প্রয়োজনে নাগরিক সমাজের কাছেও যাব।
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুবীর নাগ অবশ্য বলেন, ওই ব্যক্তি আমাদের মণ্ডল সভাপতি ছিল না। তবে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ আছে। আগেও ওঁকে একবার আমরা শো কজ করেছিলাম। এদিনের ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। শিক্ষকদের আমরা সম্মান করি। পাশাপাশি আইন হাতে নেওয়ার শিক্ষা দল কাউকে দেয়নি। পুলিস আইনানুগ পদক্ষেপ করুক। অভিযুক্ত কৌশিক জানার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
স্থানীয় ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পোলবার বীরেন্দ্রনগর হাইস্কুলে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ান হয় এবং স্থানীয় এলাকায় তার সুনাম আছে। এদিন স্কুলে পরীক্ষা ছিল। এদিন দুপুরে আচমকা স্থানীয় বিজেপি নেতা কৌশিক জানা ও তার এক সেনাবাহিনীর সদস্য বন্ধু সহ স্থানীয় ১৫-২০ জন যুবক স্কুলে চড়াও হয়। তারা প্রথমে প্রধান শিক্ষক সব্যসাচীবাবুর কাছে স্কুলে শিক্ষকদের অনিয়মিত আসা যাওয়া নিয়ে জবাব তলব করে। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে আইনিভাবে জবাব চাওয়ার কথা বলতেই ওই যুবকরা মারমুখী হয়ে ওঠে। এরপর তারা শিক্ষকদের ঘরে চড়াও হয়। সেখানে শিক্ষকদের ধরে ধরে অশ্রাব্য গালিগালাজ শুরু করে। এরই মধ্যে এক শিক্ষক মনোজিৎ কর্মকার ভিডিও করতে শুরু করলে ওই ভিড় তার উপরে চড়াও হয়ে বেদম মারধর শুরু করে এবং মোবাইল কেড়ে নেয়। একইসঙ্গে হামলাকারীদের আরেকটি অংশ আরও কয়েকজন শিক্ষকের উপরে চড়াও হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চালিয়ে তারা ‘উপযুক্ত শিক্ষা হয়েছে’ দাবি করে স্কুল ছেড়ে চলে যায়। হতভম্ব ও ভীত শিক্ষকরা এরপরে স্কুল থেকে বের হওয়ার সাহস হারিয়ে ফেলেন। পরে পুলিস এসে ওই শিক্ষকদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়।