গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর কাজকর্মের কথা ভাবতে বসলে বিশেষ কিছু মনে করতে পারছেন না বাসিন্দাদের একাংশ। রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরে সাংসদকে এলাকায় দেখেছেন কি না, ভাবতে গিয়ে মাথা চুলকোতে হচ্ছে চাঁচল সহ অন্য এলাকার বাসিন্দাদের। না পাওয়ার তালিকা গুনে শেষ করতে পারছেন না তাঁরা।
তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির কথায়, কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ হিসাবে খগেনবাবুর অনেক সুযোগ ছিল। তিনি উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। সিংহভাগ উন্নয়নমূলক কাজ রাজ্য সরকার করেছে।
বামনগোলা ব্লকের মাছুয়া ফেরিঘাট এবং হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী-পুরাতন মালদহের মুচিয়া শিবগঞ্জের মধ্যে টাঙ্গন নদীর উপর সেতুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাংসদ। এখনও বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বামনগোলার পাকুয়া গোবরাকুড়ি পঞ্চতীর্থ মহাশ্মশানে ইলেক্ট্রিক চুল্লি নির্মাণের কাজ শুরুই হয়নি।
পুরাতন মালদহের শিক্ষক অমৃত ঘোষ বললেন, সাংসদ মনে রাখার মতো কোনও কাজ করেননি। এর আগে সাংসদরা গৌড় ভবন নির্মাণ সহ একাধিক কাজ করেছেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে দাবি সত্ত্বেও উত্তর মালদহে বড় অডিটোরিয়াম হয়নি।
লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হলে চাঁচলের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খগেনবাবু। পাঁচ বছরে মাত্র একবার জনতার দরবার করে সাংসদ দায় সারেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
সিপিএম জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রর বক্তব্য, উত্তর মালদহে গত পাঁচ বছরে কোনও ভারী শিল্প হয়নি। পুরাতন মালদহের শিল্পতালুক ধুঁকছে। খগেনবাবু শিল্প আনতে ব্যর্থ।
গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে খগেনবাবু গাজোলে গিয়ে কাটিকন্দর থেকে চাকনগর যাওয়ার চার কিলোমিটার বেহাল রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন। বাসিন্দারা এখনও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের আশায়। তাছাড়া ময়না গ্রামের শ্রীমতি খাঁড়িতে সেতু ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় কমিউনিটি টয়লেট তৈরি হয়নি।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চাঁচলে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য তৎকালীন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি আড়াই কোটি টাকা দিয়েছিলেন। পরে তৃণমূল সাংসদ মৌসম নুর টাকা বরাদ্দ করেন। কিন্তু খগেনবাবুর মেয়াদ শেষ হতে চললেও কোটা থেকে অর্থ দেননি। কুশিদা থেকে চাতর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ মহানন্দা নদীর বাঁধরোড বেহাল হয়ে রয়েছে। সাংসদও উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ।
গত নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরে খগেনবাবু স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও গঙ্গা-ফুলহারের ভাঙন রোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কেন্দ্রে তাঁর দল ক্ষমতায় ফিরলেও সেই সমস্যার সমাধান হয়নি।
কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায়ের মন্তব্য, ইউপিএ জামানায় উত্তর মালদহে অনেক কাজ হয়েছিল। বিজেপি এই জেলাকে বঞ্চনা ছাড়া আর কিছু দেয়নি। সারা দেশের মতো মালদহেও বিজেপি উন্নয়ন করতে ব্যর্থ।
খগেনবাবু অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেছেন রাজ্য সরকার তথা প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণ করা যায়নি। গত পাঁচ বছরে অনেক কাজ করেছি। হরিশ্চন্দ্রপুরের মতো ছোট স্টেশনে সব দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপ দেওয়া সম্ভব নয়। চাঁচলেও বহুবার গিয়েছি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ কেউ প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ তুলছেন। এসব ভিত্তিহীন।