বহু প্রচেষ্টার পর পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে শরিকি সহমত। ব্যবসা, পেশা ও ধর্মকর্মে শুভ সময়। ... বিশদ
সীমিত ক্ষমতায় কীভাবে সাহায্য করা যায় এই ভাবনা থেকেই চারজন মিলে শান্তিনিকেতনের রতনপল্লিতে গড়ে তুলেছেন মানবতার দেওয়াল। সেখানে গরীব ও দুঃস্থদের জন্য টাঙ্গানো হয়েছে বিভিন্ন পুরনো, অব্যবহৃত জামা কাপড় ও শীতবস্ত্র। যখন যার যেটা প্রয়োজন তারা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। সাড়া পেয়েছেন বেশ ভালোই। শান্তিনিকেতনের আশেপাশের গরিব ও দুঃস্থ পরিবার রয়েছে, তাঁরা সেখান থেকে জামাকাপড় নেওয়া শুরু করেছেন। উচ্ছ্বসিত প্রিয়তীরা। তাই শুধু রতনপল্লিতে না থেমে শান্তিনিকেতনের আরও বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা মানবতার দেওয়াল আঁকতে চান বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা থেকে শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করতে এসেছেন প্রিয়তী বাঁধন রূপ। তিনি পল্লিশিক্ষা ভবনের এগ্রিকালচার বিভাগের ছাত্রী। মূলত, তাঁর ভাবনা থেকেই শুরু হয় এই উদ্যোগ। তাঁকে সাহায্যে এগিয়ে আসেন সহপাঠী শিলিগুড়ির দীপকুমার মণ্ডল। তাঁদের উদ্যোগের কথা জানতে পেরে বোলপুরের নানুরের বিশ্বভারতীর পল্লি সংগঠন বিভাগের ছাত্রী রিম্পা হাজরাও সেই কাজে যোগ দেন। আর মানবতার দেওয়াল রং তুলিতে সাজিয়ে তুলেছেন আলিপুরদুয়ার থেকে আসা কলাভবনের ছাত্র সৌরভ সাহা।
প্রিয়তী বলছিলেন, ‘ছোটবেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালের গায়ে বিভিন্ন আঁকিবুকি করে হ্যাঙ্গার টাঙ্গাতে দেখেছি। সেখানে অনেকে অব্যবহৃত ও পুরনো জামাকাপড় রেখে যেতেন। সেগুলি দুঃস্থ মানুষজন সংগ্রহ করতেন। শান্তিনিকেতন ক্যাম্পাসের চারপাশে অনেক আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। তাঁদের অনেকেই দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন। আমি বিষয়টি সৌরভ, রিম্পা ও দীপকে জানাই। তাঁরাও সানন্দে রাজি হয়ে যান। এরপর সৌরভ নিজের মুন্সীয়ানায় বিশ্বভারতীর রতনপল্লি এলাকার সীমানার পাঁচিলে দুর্দান্ত পেইন্টিং তুলে ধরেন। সেখানে একইভাবে জামা কাপড়ের হ্যাঙ্গার রেখেছি।’
এরপর আর সৌরভদের ফিরে তাকাতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের অনেকেই বাড়ি ফিরে যাওয়ার আগে নিজেদের জামাকাপড় সেখানে রেখেছেন। এমনকী, পুরনো জামা কাপড় দিয়ে সাহায্য করতে স্থানীয় বাসিন্দারাও এগিয়ে এসেছেন। সেখান থেকে শান্তিনিকেতনের বালিপাড়া, পিয়ারসনপল্লি, সুরশ্রীপল্লির দুঃস্থদের অনেকেই নিয়মিত জামা কাপড় সংগ্রহ করেন। পড়ুয়াদের এই উদ্যোগের কথা জানতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কবিগুরু তো এমনটাই চেয়েছিলেন—দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে যাবে না ফিরে…। ওঁদের শুভেচ্ছা জানাই।’