উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
দেখা যাক পরিস্থিতি কতটা খারাপ ছিল সোনার বাজারে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের হিসেব বলছে, বিনিয়োগ এবং গয়না— দু’টি ক্ষেত্রেই একই রকম মার খেয়েছে সোনার বাজার। আসা যাক গয়নার কথাতেই। যেখানে গত বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সোনার বিক্রি ছিল ১৪৮.৮ টন, সেখানে এ বছর ওই তিন মাসে তা হয়েছে ১০১.৬ টন। অর্থাৎ বিক্রি কমেছে ৩২ শতাংশ। টাকার অঙ্কেও ব্যবসা কমেছে ১৭ শতাংশ হারে। হিসেব বলছে, যেখানে ৪০ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার বিক্রিবাটা ছিল গত বছরের ওই সময়সীমায়, সেখানে এবার তা ৩৩ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও সোনার বিক্রি কমেছে ৩৫ শতাংশ। গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট সোনা বিক্রি হয়েছে ২২.৩ টন। টাকার নিরিখে বিক্রি কমেছে ২১ শতাংশ। বিনিয়োগ ও অলঙ্কার— সব মিলিয়ে সোনা বিক্রি কমেছে ওজনের নিরিখে ৩২ শতাংশ এবং টাকার নিরিখে ১৮ শতাংশ। কাউন্সিলের দাবি, ২০০৫ সাল থেকে কোনও ত্রৈমাসিকে এতটা খারাপ অবস্থা দেখা যায়নি।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেষ তিন মাসে যেভাবে সোনার চাহিদা কমেছে, তার প্রভাব পড়েছে গোটা বছরের হিসেবেই। জানুয়ারি থেকে ওই ন’মাসে মোট সোনা বিক্রি হয়েছে ৪৯৬ টন। অথচ গত বছর ওই তিন মাসে তা ছিল ৫২৩.৯ টন। বিক্রি কমেছে ৫.৩ শতাংশ হারে। এক্ষেত্রেও গয়না ও বিনিয়োগ— প্রায় একই হারে কমেছে বিক্রি। এ বছরের প্রথম ছ’মাসে যেখানে গয়নার জন্য সোনা বিক্রি হয়েছিল ৩৯৫.৬ টন, সেখানে বিনিয়োগের জন্য সোনা বিক্রি হয় ১০০.৪ টন। কাউন্সিলের কর্তারা বলছেন, চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত সময়ে চাঙ্গা ছিল ভারতের সোনার বাজার। সেই কারণেই তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বিক্রিতে বিপর্যয় হলেও, ন’মাসের হিসেবে তা ততটা প্রকাশ পায়নি। কতটা ভালো ছিল এপ্রিল থেকে জুন মাসের বাজার?
কাউন্সিলের তথ্য, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এ দেশে মোট ২১৩.২ টন সোনা বিক্রি হয়। আগের বছরের ওই একই সময়সীমার নিরিখে বিক্রি বৃদ্ধির হার ১৩ শতাংশ। ওই সোনার দাম ছিল ৬২ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। দামের নিরিখে সেই বৃদ্ধির হার মার্কিন ডলারের হিসেবে ১৩ শতাংশ। ভারতীয় মুদ্রায় বৃদ্ধির হার ১৭ শতাংশ। মোট সোনা বিক্রির মধ্যে শুধুমাত্র গয়না বিক্রি হয়েছিল ১৬৮.৬ টন। তার দাম ৪৯ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। গয়না বিক্রির পরিমাণের নিরিখে আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশ।
কলকাতা সহ গোটা দেশেই সোনার দাম ছুঁয়েছিল প্রতি ১০ গ্রাম ৪০ হাজার টাকা। সেই পরিস্থিতি এখন সামান্য উন্নতির দিকে। দাম প্রায় দেড় হাজার টাকা কমেছে। অন্যদিকে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে যেমন দেওয়ালি সহ সর্বভারতীয় স্তরে হরেক উৎসব আছে, তেমনই ধনতেরাসেও কেনাকাটা হয়েছে ভালো। বছরের শেষে তা থেকেই আশার আলো দেখছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল।