শাস্ত্র অধ্যয়নে গতি বৃদ্ধি ও পরীক্ষায় শুভ ফল লাভের সম্ভাবনা। নতুন কর্মপ্রাপ্তি হতে পারে। দাম্পত্যে ... বিশদ
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে জাতীয় সড়কের ধারে মহানালা। সেই নালার উপরই দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে কেউ পাকা, কেউ বা চালাঘর বানিয়ে খাবারের দোকান চালিয়ে আসছিলেন। দোকানদার ও খদ্দেররা সেই নালাতেই নোংরা আবর্জনা ফেলছিলেন। তার জেরে মহানালা বুজে গিয়েছিল। ফলস্বরূপ মেডিক্যালের ভিতরের নিকাশি নালা ছাপিয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ে গোটা চত্বর। জলমগ্ন হয়ে পড়ায় পাঁচদিন ডিজিট্যাল এক্সরে পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে, জলমগ্ন হয়ে পড়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা প্রাচীন বাবলা কালীমন্দির। প্রশাসনের নির্দেশে মহানালার উপরে থাকা দোকানদারদের সরিয়ে গত সোমবার থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মহানালায় জমে থাকা নোংরা আবর্জনা জেসিবি দিয়ে তুলে পাড়ে তুলে রাখা হচ্ছে। এদিকে সেই নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত কাদার উপরেই বসে পড়েছে খাবারের দোকান। কোথাও তেলেভাজা, কোথাও ভাতের হোটেল কিংবা চায়ের দোকান। খাবারের ওপর মাছি ভনভন করছে। চারিদিকে দুর্গন্ধ। এরই মধ্যে খাবার তৈরি, পরিবেশন এবং খাওয়া দাওয়া। দামে সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় রোগীর আত্মীয় পরিজনরা সেই সব খাবার খান। পাশাপাশি নালার ওপর খাবারের জল ভর্তি জার রাখা হয়েছে। চলছে থালা, বাসন ধোয়ার কাজ।
বৃহস্পতিবার মহানালা সংস্কারের কাজ পরিদর্শন করতে এসে মেডিক্যাল চত্বরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবারের দোকান দেখে হতবাক মহকুমা শাসক। মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করবী বড়াল বলেন, সত্যিই অবাক ও চিন্তা করার বিষয়। নালার উপরে কাঠের পাটাতন দিয়ে রান্না করা হচ্ছে। এমন দেখেছি জমে থাকা জলে থালা বাসনও পরিষ্কার করা হয়। এসব খাবার খেয়ে মানুষ কলেরা, ডায়ারিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস সহ পেটের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। এসব দেখার জন্য ফুড সেফটি অফিসার রয়েছেন। তাঁরা কী করছেন জানি না।
স্থানীয়রাও জানান, কোনও প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই এসব খাবারের দোকান চলছে। কোথাও ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অনেকে বাসি পচা খাবারও বিক্রি করছেন। মানুষ খিদে মেটাতে সেইসব দোকানে ভিড় করছেন। খাবার কিনে খাচ্ছেন। অথচ ফুড সেফটি বিভাগের কোনও নজরদারি নেই।
অন্যদিকে ফুড সেফটি বিভাগের নোডাল অফিসার প্রকাশকুমার রায় বলেন, এদিনই অফিসারদের ওই এলাকায় পাঠাচ্ছি। মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে বলেন, নালার কাদার উপরই খোলা অবস্থায় খাবার তৈরি ও বিক্রি করা হচ্ছে। তেলেভাজা, ঘুগনির উপর মাছি ভনভন করছে। নালার জলে বাসনও ধোয়া হচ্ছে। কীভাবে মানুষ খাচ্ছেন, তা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। তাই ওই ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, এখানে জনস্বাস্থ্যের বিষয় জড়িত। এদিনই দোকানগুলিকে সরিয়ে দিতে হবে। নইলে এই এলাকায় কলেরা, ডায়ারিয়ার দেখা দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। যতদিন না পাকা নালার কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততদিন অন্যত্র দোকান চালানোর জন্য বলা হয়েছে।