শাস্ত্র অধ্যয়নে গতি বৃদ্ধি ও পরীক্ষায় শুভ ফল লাভের সম্ভাবনা। নতুন কর্মপ্রাপ্তি হতে পারে। দাম্পত্যে ... বিশদ
১০ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মূল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। শনিবার কিছু পরীক্ষার্থীর ঐচ্ছিক বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। প্রশ্নফাঁস রুখতে এবছর পর্ষদের তরফে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়। প্রশ্নপত্রে কিউআর কোডও বসানো হয়েছিল। পর্ষদের এই সিদ্ধান্তে প্রশ্নফাঁসে লাগাম টানা গেলেও টুকলি যে রোখা যায়নি, তা পরীক্ষা শেষে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা ছেঁড়া কাগজগুলি দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। যার মধ্যে বড় অংশই মাইক্রো ফটোকপি। দেখেই বোঝা যায়, টুকলির জন্যই ওই কাগজ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নকলের পাশাপাশি অনেক পরীক্ষার্থী পুরনো বইখাতাও ছিঁড়ে ফেলেছে। এটা কী ধরনের আনন্দ, প্রশ্ন তুলেছেন ডোমকলের বাসিন্দারা।
ডোমকলের শিক্ষামহল জানিয়েছে, পরীক্ষায় টুকলি করা নতুন কিছু নয়। অনেকদিন ধরেই কমবেশি হয়ে আসছে। যারা সারা বছর ফাঁকি দেয়। তাদের অনেকেই টুকলির ভরসায় থাকে। পরীক্ষা শেষে তারা সেই সব টুকলি ছিঁড়ে দেয়। তবে পরীক্ষার শেষদিনে বইখাতা, প্রশ্নপত্র ছেঁড়ার দৃশ্য কয়েক বছর আগেও দেখা যেত না। এবার সেটাই দেখা গেল। আগে মাধ্যমিককে পড়ুয়ারা জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মনে করত। সেজন্য পরীক্ষা দিতে এসে কখনও কোনওরকম বাজে আচরণ করত না। পরীক্ষা শেষ হলে পুরনো বই নিচু ক্লাসের ভাইবোনদের দিয়ে দিত। কিন্তু এখন পুরনো বই কাউকে দেওয়ার কথা ভাবে না। এখন তা ছিঁড়ে উড়িয়ে অদ্ভুত উল্লাসে মেতে উঠেছে কিছু পরীক্ষার্থী।
ডোমকল গার্লস কলেজের সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক প্রিয়ঙ্কর দাস বলেন, পরীক্ষা শেষে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ প্রতিবারই দেখা যেত। এখন যে বদলটা চোখে পড়ে, তা হল উচ্ছ্বাসের নামে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের নামে বইখাতা ছিঁড়ে ফেলা কখনওই সুস্থ চিন্তাধারার লক্ষণ নয়। এটা শুরুতেই আটকানো দরকার। না হলে সুস্থ সমাজকে এই উচ্ছৃঙ্খলতা গ্রাস করবে। পড়াশোনার সঙ্গে সঠিক আচরণও ছাত্রছাত্রীদের শেখা দরকার।
সাগরপাড়ার শিক্ষক সইফুর মণ্ডল বলেন, দিন দিন সমাজটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে! একসময় নিচু ক্লাসের ছেলেমেয়েদের নিজেদের পুরনো বই, পড়ার নোট দিয়ে খুব আনন্দ পেত পড়ুয়ারা। আর এখন যেভাবে রাস্তায় বই ছিঁড়তে দেখা যাচ্ছে, তা লজ্জাজনক। হয়তো আমরাই ওদের বইয়ের আসল মূল্য বুঝিয়ে উঠতে পারিনি।