সংবাদদাতা, হলদিয়া: প্রণবেশ্বর শিবমন্দিরের চাতালে ন’ মাসের ছেলেকে কোলে নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে মহিলা। কী? না, দিদিকে দেখব। ওই মহিলার সঙ্গে আরও তিন প্রতিবেশী। তাঁদেরও একজনের কোলে আট মাসের ঘুমন্ত সন্তান। চাঁদিফাটা রোদ থেকে বাঁচতে একটু ছায়ায় এসে অপেক্ষা করছেন সবাই। গাছতলায় তখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এক মহিলা ফিডিং বটল বের করে কোনও রকমে তেষ্টা মেটাচ্ছেন শিশুসন্তানের। ঠিক তখনই আকাশে গোঁ গোঁ শব্দ। সভামঞ্চ থেকে ঘোষণা হচ্ছে, সবাই ছাতা বন্ধ করুন, টুপি, ওড়না, তোয়ালে সামলে রাখুন। আমাদের প্রিয় দিদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার পৌঁছে গিয়েছে, এবার ল্যান্ড করবে। ভিড় ঠেলে তখন শিশুসন্তান কোলে বেহুঁশের মতো দৌঁড় দিলেন মহিলারা। দিদিকে কাছ থেকে এক ঝলক দেখতে। গনগনে রোদ উপেক্ষা করে বহু মহিলাই কোলের সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন। এদিন ৪১ ডিগ্রির উপর তাপমাত্রা ছিল হলদিয়া-মহিষাদল এলাকায়। দুপুর ১২টায় আগুনের হল্কা বইছে চারদিকে। প্রবল তাপপ্রবাহকে থোড়াই কেয়ার করে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভার মাঠ ভরালেন মহিলারাই। দিদিকে দেখার জন্য প্রখর রোদেই কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে অপেক্ষা করেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও আপ্লুত মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ দেখে। তিনি সভামঞ্চ থেকে বক্তব্যের শুরুতে পরামর্শ দিলেন, এবার হ্যাঙ্গার ও সভার ছাউনি আরও বড় করতে হবে। ১৮ বছর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিষাদলে এলেন এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এই প্রথম। তাই বাঁধভাঙা ভিড় উপচে পড়ল মহিষাদল রাজ ময়দানে। রাজ ময়দান ছাপিয়ে সেই ভিড় রাজবাড়ি চত্বর সহ সমস্ত রাস্তাই কার্যত কয়েক ঘণ্টার জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। লক্ষ্যা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিকা কুণ্ডু, অশীতিপর তুলসীচরণ দাস ও বছর পঁচাত্তরের কালীপদ দাস কয়েক কিলোমিটার হেঁটে এদিন চলে এসেছিলেন দিদির কথা শুনতে। বললেন, দিদির জন্য এলাকায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে।