গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্য সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিজেপি মনোনীত রাজ্যপালকে খুশি করতে করা হচ্ছে সমাবর্তন। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তুমুল বিক্ষোভ দেখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে। সেই বিক্ষোভকে উপেক্ষা করেই বুধবার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পিঠ চাপড়ে দিলেন আচার্য বোস। সেই সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি দাবি করলেন, স্বশাসিত সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকারই নেই রাজ্য সরকারের। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া এই সমাবর্তনকে অন্যতম সেরা শৃঙ্খলা পরায়ন সমাবর্তন হিসেবেও সার্টিফিকেট দেন রাজ্যপাল।
স্বভাবতই এদিন সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে রাজ্যপাল ও উপাচার্যের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন কার্যত রাজ্য সরকারের প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণার মঞ্চ হয়ে ওঠে। সম্মেলনের শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হাইকোর্ট ও ইউজিসির নির্দেশ পড়ে শোনান। একাধিক রায়দান ও ইউজিসির নির্দেশিকা দেখিয়ে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে কোনও অধিকারই রাজ্য সরকারের নেই। সেই অধিকার রয়েছে আচার্য বা কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক থাকলে তাঁর হাতে। তিনি এটাও উল্লেখ করেন, ইউজিসির এই নিয়ম পার্লামেন্টে অনুমোদনপ্রাপ্ত। এরপরই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ইস্যুতে সুর চড়াতে থাকেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, বাংলা সারা দেশের এডুকেশন হাব হওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে অত্যাধিক হস্তক্ষেপের জেরে তা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের রায় ও ইউজিসি নিয়ম অনুযায়ী আচার্যই একমাত্র উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ করতে পারেন। আমি যদি ভুল জেনে থাকি, তা প্রমাণ করুন। এদিনের ছাত্র বিক্ষোভকেও তিনি আমল দিতে চাননি। তিনি বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বেশিরভাগ পড়ুয়া। কিছু পড়ুয়া বিরোধিতা করেছেন। তিনি এও বলেন, পড়ুয়ারা রাজনৈতিক সংসর্গ থেকে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। কিন্তু তা যেন শিক্ষাক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে। সেটা বরদাস্ত করা হবে না।
এরপরই রাজ্যপাল রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসা প্রসঙ্গে বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, বেশ কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। গোপনীয়তার স্বার্থে কতগুলি অভিযোগ এসেছে, কারা অভিযোগ করেছে, তা প্রকাশ্যে আনছি না।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির নির্দেশ মতো চলা রাজ্যপালকে খুশি করতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঢেকে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও সমাবর্তন অনুষ্ঠান করে অবৈধ কাজ করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদে এদিন পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ওয়েবকুপার জেলা সভাপতি বীরু রজক বলেন, অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করে আমরাও কালো পতাকা দেখিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হল। সেখানে ৪৩ জন পিএইচডি, ৫৪ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ১৫১ জন পড়ুয়া।