কাজকর্ম, বিদ্যাশিক্ষায় দিনটি শুভ। বৃত্তিগত প্রশিক্ষণে সাফল্যের সুবাদে নতুন কর্মপ্রাপ্তির সম্ভাবনা। দেহে আঘাত লাগতে পারে। ... বিশদ
সাদা বাড়িটায় কেমন যেন একটা নিঃশব্দতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্রেফ ভাসছে গোলাপ পাপড়ির সুগন্ধ। দেওয়ালে রাখা মাদার টেরিজা, গণেশের ছবি পেরিয়েও চোখ টানছে মনমোহন সিংয়ের ব্যঙ্গচিত্র। সেগুলি জ্বলজ্বল করছে। কাচের বাক্সে শায়িত জাতীয় পতাকায় মোড়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিথর দেহ। তারই মধ্যে থেকে মুখটুকু দেখা যাচ্ছে। ঠোঁট সামান্য খোলা। লেগে রয়েছে সেই পরিচিত মৃদু হাসিটি। নীল পাগড়ি আর চৌকো ফ্রেমের চশমার লেন্সের পিছনে শান্ত চোখ দুটি ঘুমে মিশে। বাক্সের উপরও রাষ্ট্রপতি ভবনের পক্ষ থেকে মেলে দেওয়া হল আরও একটি পতাকা। শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
তবে শুক্রবার সকালে প্রথমেই যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একটু বেলায় সোনিয়া-প্রিয়াঙ্কা-রাহুল। সাদা ফুলের রিং মনমোহন সিংয়ের নিথর দেহের পায়ের নীচে রাখতে গিয়ে আবেগে হাত কাঁপছিল সোনিয়ার। যাকে একদিন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসিয়েছেন, কাজ করেছেন একসঙ্গে, তাঁকে এভাবে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হয়তো বা স্মৃতি সামাল দিতে পারেননি সোনিয়া। মাকে সামলে নিলেন রাহুল। প্রিয়াঙ্কা স্রেফ শ্রদ্ধাই জানাননি, শোক পুস্তিকায় লিখেছেন, ১৭ লাইনের শ্রদ্ধাবার্তা। মনমোহন সিংকে সর্বদা মিস করবেন বলেই শেষ লাইনে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার ঠিক আগের পাতাতেই বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার শ্রদ্ধালিপি।
শুক্রবার সারাদিন অঝোর ধারা চলল দিল্লিতে। তারই মধ্যে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা। অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামন, জিতেন্দর সিং প্রমুখ। অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অখিলেশ যাদব, এম কে স্ট্যালিনের মতো ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শীর্ষ নেতারাও। প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসা, নীতি আয়োগের সহ সভাপতি সুমন বেরিকে দেখা গেল।
মা গুরশরন কাউরের পাশে সর্বদা দেখা গেল মনমোহন সিংয়ের দুই কন্যা উপিন্দর আর দমন সিংকে। ছোট অমৃত সিং শুক্রবার রাত আড়াইটেয় ফিরছেন আমেরিকা থেকে। তারপরই আজ শনিবার শেষকৃত্য। প্রথমে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ২৪ আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে। সেখান থেকে নিগমবোধ শ্মশান ঘাট। যদিও ইন্দিরা গান্ধীর সমাধিক্ষেত্র শক্তিস্থলে অন্ত্যেষ্টি ও মেমোরিয়াল বানানোর জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে কংগ্রেস। শুক্রবার রাতে মনমোহন-পত্নীর সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
শুক্রবার বৃষ্টি ঝরেই চলেছে রাজধানীতে। প্রকৃতির কান্না যেন থামছেই না তার কৃতী সন্তানকে কাছছাড়া করতে হবে ভেবে!