রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশজুড়ে রামমন্দির আবেগকে ফের উসকে দিয়ে বিজেপির পক্ষে হাওড়া তুলতে সক্রিয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। কেন্দ্রে নয়া সরকার গঠনের লক্ষ্যে ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু প্রথম দফার ভোট। তার দু’দিন আগে, ১৭ এপ্রিল রামনবমী। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন হয়েছে ২২ জানুয়ারি। পরবর্তী দু’মাসে রাম-আবেগ খানিকটা স্তিমিত। তাই ভোটের মুখে রামনবমী তিথিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে ভিএইচপি। মূল উদ্দেশ্য, পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রকে নিয়ে জনমানসে ভাবাবেগ ফেরানো। তাই ৯-১৭ এপ্রিল রামমহোৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি। পশ্চিমবঙ্গে ন’দিনের এই বিশেষ কর্মসূচিতে পাঁচ হাজার জায়গায় শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, পুজাপাঠসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান হবে। এই প্রসঙ্গে ভিএইচপির সর্বভারতীয় সহসম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, হিন্দুসমাজের কাছে রামচন্দ্রের আদর্শ ছড়িয়ে দিতে বাংলায় রামমহোৎসব পালিত হবে। ভারতীয়ত্বের অস্মিতা অটুট রাখার লক্ষ্যে রাজ্যের ব্লক পর্যায়ে পালিত হবে রামনমবী।
উল্লেখ্য, রামমন্দির উদ্বোধনের আগে ভারতজুড়ে বিশেষ জনসম্পর্ক অভিযান চালিয়েছে ভিএইচপি। প্রায় ২০ কোটি পরিবারের কাছে রামজন্মভূমির বিশেষ ‘অক্ষত চাল’-সহ একাধিক সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ সেরেছে তারা। সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্য সংখ্যা ধরলে প্রায় ১০০ কোটি ভারতবাসীর কাছে সরাসরি সম্পর্কস্থাপন করেছে ভিএইচপি। আসন্ন রামনবমী উপলক্ষ্যে ৯ এপ্রিল থেকে সেই সম্পর্ককে ফের নতুন করে ‘তাজা বাতাস’ জোগান দিতে চাইছে এই গেরুয়া সংগঠন। 
ভোটে কোন দলকে সমর্থন করার আবেদন জানাবে ভিএইচপি? জবাবে শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, আমরা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সরাসরি সমর্থন করার কথা বলব না। তবে গত ২৪-২৭ অক্টোবর অযোধ্যায় আমাদের সাংগঠনিক বৈঠকে রামমন্দির নিয়ে বিশেষ প্রস্তাব পাস হয়েছে। সেখানে সাফ বলা হয়েছে, যে রাজনৈতিক সত্তা রাষ্ট্রহিতকারী, যারা ‘রামত্ব’ অর্থাৎ রামরাজ্য তৈরির লক্ষ্যে কাজ করবে, সেই সত্তাকেই সমর্থন করার আবেদন জানাব আমরা। যে সরকার সমস্ত দেশবাসীকে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্রতী, আমরা তাদের সমর্থন করব। রাম রাজত্বে দুর্নীতি, চুরি, তোলাবাজি মতো ঘৃণ্য অপরাধ ঘটবে না। ভারতকে এই ধরনের অপরাধ থেকে যে সরকার মুক্ত করতে পারবে, আমরা সেই রাজনৈতিক সত্তাকেই স্বাগত জানাব।