অংশীদারি কারবারে মন্দার সম্ভাবনা। যে কোনও কাজকর্মে বাধার মধ্যে উন্নতি। বৃত্তিগত শিক্ষা লাভে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট ডায়মন্ডহারবার রোডে বড়িষা স্কুলের সামনে বাবার হাতে ধরে রাস্তা পার হওয়ার সময় লরিতে পিষে মৃত্যু হয় ছোট্ট সৌরনীল সরকারের। পরীক্ষার দিন নিজের স্কুলের দরজায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীলের মৃত্যুতে আগুন জ্বলেছিল বেহালায়।
তদন্তে নেমে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু ঠেকাতে কলকাতা ট্রাফিক পুলিসের কর্তারা একগুচ্ছ সুপারিশ করেছিলেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, স্কুল শুরুর সময় সামনরি রাস্তায় ট্রাফিক পুলিস মোতায়েন করা। সেসব করেও বন্ধ হয়নি মৃত্যু-মিছিল! গত বছর ২৩ অক্টোবর উত্তর কলকাতার বি টি রোডে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। বাবার হাত ধরে স্কুল যাওয়ার পথে সেদিন বেপরোয়া ট্যাক্সি পিষে দেয় বাবা ও মেয়েকে। পাইকপাড়ার বাসিন্দা অমিতকুমার সাহু পাঁচ বছরের মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস ধরতে দাঁড়িয়েছিলেন বি টি রোডে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে দু’জনেরই মৃত্যু হয়।
গত ২১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ যাদবপুর ৮বি বাস স্ট্যান্ডের কাছে পাঁচ বছরের মেয়েকে স্কুটারে বসিয়ে স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তাপস মণ্ডল ও দেবশ্রী মণ্ডল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এস-৩১ রুটের একটি সরকারি বাস ওই স্কুটারকে ধাক্কা মারলে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তাঁরা। বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান দেবশ্রী দেবী। বাবা ও মেয়ে অবশ্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছে।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় কেন এত দুর্ঘটনা? তাহলে কি স্কুলের সামনে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিস থাকছে না? নাকি ছাত্রছাত্রীদের তরফে গাফিলতি রয়েছে? কলকাতা পুলিসের এক সূত্র জানাচ্ছে, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ভোরে ঘুম থেকে দেরি হচ্ছে অভিভাবকদের একাংশের। তারপর স্কুলে যাওয়ার জন্য ছেলেমেয়েকে নিয়ে পড়িমড়ি ছুটছেন। বিশেষ করে শীতের দিনে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।’ আবার অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, সকালের দিকে স্কুলের সামনে পুলিসের দেখা মেলে না।
কলকাতা পুলিসের দাবি, বৃহত্তর কলকাতায় ২৬টি ট্রাফিক গার্ডে প্রতিদিন রাতের ডিউটিতে দু’জন করে সার্জেন্ট থাকেন। সকালে সার্জেন্টরাই স্কুলের সামনে যান নিয়ন্ত্রণ করেন। এছাড়াও থাকেন ট্রাফিক গার্ডের ওসি এবং অ্যাডিশনাল ওসিরা। পুলিসের দাবি, শুধু ট্রাফিক পুলিস মোতায়েন করে দুর্ঘটনা বা মৃত্যু ঠেকানো মুশকিল। বহু অভিভাবক এবং তাঁদের সন্তানরা বিনা হেলমেটে দু’চাকার গাড়িতে চেপে স্কুলে আসছেন। এব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন করার জন্য স্কুলগুলিকে চিঠি দিলেও তাতে কাজ হয়নি। আবার অনেকেই তাড়া থাকায় চলন্ত বাসের সামনে হাত দেখিয়ে এক ছুটে রাস্তা পার হন। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো মুশকিল।