ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়: রংচঙে একটা কাগজের বাক্স। তার উপরে রঙিন জোকারের মুখ। বাক্সটা এমনই যে জোকারের মুখটা খুললেই বেরিয়ে আসে লাল-নীল-হলুদ-সবুজ ছোট ছোট লজেন্স। মৌরি লজেন্স। আট ও নয় দশকের বাচ্চাদের কাছে এই লজেন্সের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। আকর্ষণটা ছিল মূলত ওই জোকারের বাক্সটার জন্যই। পাড়ার ছোট কোনও ঘুপচি দোকানে কাচের বড় জারের ভিতর রাখা থাকত সেই রঙিন আকর্ষণ। অবশ্য শুধু জোকার-বাক্সই নয়। খেলনা হ্যারিকেন বা বড় কাচের জারের ছোট ভার্সন। তার ভিতর থাকত রংবেরঙের মৌরি। যাঁদের শৈশব ওই নয়ের দশকের গোড়ার দিকে কেটেছে, তাঁরা বুঝবেন ওই কাচের বয়ামে রাখা লজেন্সের মাহাত্ম্য। মৌরির পাশাপাশি থাকত কমলালেবুর কোয়ার মতো লজেন্স বা হজমি গুলি। সেকথা ভাবলেই এক নস্টালজিয়া ঘিরে ধরে। মনে হয় যদি আবার সেই দিনগুলো ফিরে আসত। সেই হারানো দিনই হঠাৎ ফিরে আসবে যদি কখনও কংক্রিটের শহরে কিংবা মফস্‌স঩লে নজরে পড়ে ঘুপচি দোকান। আর সেখানে সাজানো থাকে পুরনো দিনের স্মৃতি। 
বছর তিরিশ পেরিয়ে গিয়েছে। তবে এখনও এমন বেশ কিছু দোকান রয়েছে, যা আট বা নয়ের দশকের সেই হারানো দিন ফিরিয়ে দিতে পারে। গড়িয়া-কামালগাজি মোড় পেরিয়ে সোনারপুরের দিকের রাস্তায় ঢুকেই বাঁদিকে সেই দোকান। সাজানো রয়েছে অসম আকৃতির হজমি গুলি, কমলালেবু লজেন্স, মৌরি লজেন্স। শুধু তাই নয়। ছেলেবেলার চটরমটরও স্থান পেয়েছে প্লাস্টিকের কৌটোয়। তফাত সেটাই। বড় কাচের জারের পরিবর্তে এই নস্টালজিয়ার জায়গা করে নিয়েছে ছোট প্লাস্টিকের কৌটো। কামালগাজি ছাড়াও বারুইপুর, সোনারপুরের অলিগলিতে ঘুরলে এখনও কিছু দোকান মেলে যারা ধরে রেখেছে 
আমার, আপনার সেই শৈশবের স্মৃতি। আমাদের নস্টালজিয়া।