বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
হ্যাঁ, একদমই কলকাতার মেয়ে। লা’মার্টিনিয়ার থেকে স্কুলিং তারপর লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে পড়াশোনা। কলেজ পর্যন্ত তো পুরোটাই কলকাতাতে কাটিয়েছি।
তারপর মুম্বই গেলেন, ফিল্মের সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
ফিল্মের প্রতি আমার বরাবরই ঝোঁক ছিল। বিশেষ করে হিন্দি ফিল্ম। আমাদের বাড়িতেও হিন্দি ছবি দেখার চল ছিল। ভিসিডি, ভিসিআর নিয়ে শাহরুখ খানের ‘বাজিগর’ দেখা, এগুলো ছিল। আমি এই ফিল্মের জগত্টাকে এক্সপ্লোর করতে চেয়েছিলাম। ক্লাস টুয়েলভে পড়ার সময় ঠিক করে নিয়েছিলাম, অভিনেত্রী হব। আমার বাবা-মা বলেই দিয়েছিল, তোমাকে কমপক্ষে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করতে হবে। আমি কলকাতার বাইরে যেতে চেয়েছিলাম। তখন থেকে কলেজে থিয়েটার করতে শুরু করলাম।
থিয়েটার কি কলেজেই করতেন নাকি কোনও দলে?
কলেজে ‘থ্রিয়েটাশন’ বলে একটা অ্যামেচার গ্রুপ ছিল। সেখানে ইংরেজি নাটক হতো। আমাদের নাটকগুলো সাধারণত জ্ঞান মঞ্চে হতো। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা আমাদের সেই নাটকের রিভিউ লিখতেন। তখনই আমি এফটিআইআই-এর বিষয়ে জানতে পারি এবং আবেদন করি। চান্সও পেয়ে যাই। এভাবেই শুরু।
ওখানে কী বিষয়ে পড়াশোনা করতে গেলেন?
অভিনয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা করতে গিয়েছিলাম।
ছবিতে অভিনয় শুরু করলেন কীভাবে?
এফটিআইআই থেকে মুম্বই যাওয়াটা খুব বড় ব্যাপার নয়। ওখানে যে ধরনের ছবি দেখানো হচ্ছে, সবার কাছে মুম্বইটাই উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর মুম্বই তো আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল। আমি সবসময় জাতীয় স্তরে কাজ করতে চেয়েছিলাম।
মুম্বইতে আপনার প্রথম ছবি কোনটা ছিল?
প্রথমে ‘ফ্রম সিডনি উইথ লাভ’ বলে একটা ছবি করেছিলাম। তার পরে ‘তুম্বার’ ছবিটা করেছি।
তার মানে সেই অর্থে বলতে গেলে ‘তুম্বার’ ছবিটাই আপনার কাছে একটা ব্রেক?
একেবারেই।
‘আর্টিকেল ১৫’-এ সুযোগ পেলেন কীভাবে?
মুম্বইয়ে অনেকদিন কাজ করার ফলে একটা পরিচিতি হয়। অডিশনের খবরগুলো পেতে থাকি। ‘আর্টিকেল ১৫’ ছবিতে অডিশন দিয়েই কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম।
আপনি বলছিলেন প্রথমে আপনার বাড়িতে একটা সমস্যা ছিল। বাড়ির লোক মেনে নিলেন কখন?
হঠাত্ করে মেনে নেননি। বিষয়টা ধীরে ধীরে হয়েছে। এফটিআইআইতে সুযোগ পাওয়ার পরে বরফ একটু গলেছিল। মা যখন দেখল আমি কাজ পেতে শুরু করেছি, ক্রমশ বিষয়গুলো সহজ হওয়া শুরু করল। মেয়ে মুম্বই গিয়ে ফিল্মে কাজ করছে, পড়াশোনা জানা বাঙালি পরিবারে যে ভয়গুলো থাকে সেগুলো ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করল। সবাই বুঝতে পারল, আমি কাজটা ভালোবেসে করছি। ‘আর্টিকেল ১৫’ যখন এল, তখন তো বাড়ির লোক একেবারেই মেনে নিয়েছে। বাড়ির অনেকেরই আশা ছিল, শিগগিরই কলকাতায় ফিরে আসব আমি (হাসি)।
আয়ুষ্মান খুরানাকে কেমন লাগল?
ও নিজের জন্য একটা নতুন রাস্তা তৈরি করে নিয়েছে। ও যে একজন এত বড় স্টার, সেটা ওঁকে দেখে বোঝার উপায় নেই। সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। আয়ুষ্মান কোনও সময় নিজেকে ইউনিটের থেকে আলাদা করে রাখেনি। সেটের মধ্যে সবাই বন্ধুর মতো হয়ে গিয়েছিলাম। ও আমার কাজটাকে সম্মান দিচ্ছে, আমিও ওর কাজটাকে সম্মান দিচ্ছি। দু’জন শিল্পীর মধ্যে যে সম্মানজনক আদানপ্রদান থাকে, সেই বিষয়টা আমাদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল।
প্রথমে পড়ুয়া হিসেবে পড়াশোনো করতে গিয়েছিলেন। তারপর কাজ পাওয়ার লড়াই শুরু হল। কতটা কঠিন ছিল?
মুম্বইতে যখন অডিশনে যাওয়া শুরু করলাম, পুরো বিষয়টাই বদলে গেল। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুরো বিষয়টা আমাকে বোঝাতে হবে। সব অডিশন আপনাকে সুযোগ এনে দেবে না। অনেক সময় কোনও অডিশনই ক্র্যাক করছে না। একের পর এক দিয়েই চলেছি। সেটা একটা জার্নি ছিল। আমি পুরো বিষয়টাকে পজিটিভ চোখে দেখেছি। নিজেকে বুঝিয়েছি আশাহত হব না। মনে কখনওই হতাশা আসতে দিইনি। সমানে অডিশন দিয়ে গিয়েছি। রোহিত শেট্টির সঙ্গে আমি ‘গোলমাল এগেইন’ ছবিতে কাজ করেছিলাম। তারপর ‘সিম্বা’ ছবিতেও একটা চরিত্রে ছিলাম।
বাংলা ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে হয়নি?
যদি কিছু ভালো ছবি, ভালো গল্প, ভালো পরিচালক পাই, আমি সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। ‘হেডকোয়াটার্স লালবাজার’ ওয়েব সিরিজটা করলাম। গল্পটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল।
বাংলা ছবি দেখা হয়?
দেখা হয়। তবে নিয়ম করে দেখি, তা নয়। বন্ধুদের কাছ থেকে যখন কোনও ছবির ব্যাপারে প্রশংসা শুনি, সেই ছবিগুলো গিয়ে দেখে আসি। আমার মা-বাবা কলকাতায় থাকে। কাজেই মুম্বই-কলকাতা যাতায়াত লেগেই থাকে। কলকতায় গেলে মা-বাবাকে নিয়ে যখন ছবি দেখতে যাই, তখন তো বাংলা ছবিই দেখি।
‘ফিল্টার কপি’তে আপনার অভিনয় তো সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ জনপ্রিয়।
•• হ্যাঁ। আমি টিভিএফেও ওয়েব সিরিজ করেছি। খুব সুন্দর ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ভিডিও করে ওরা। অল্ট বালাজির জন্য ‘ইট হ্যাপেনড ইন ক্যালকাটা’ বলে একটা ওয়েব শোয়ের কাজ করছি এখন। টিভিএফে ‘পা-গালস’ ওয়েব সিরিজটা স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়, যারা ইন্টারনেটে খুব অ্যাক্টিভ। দুটো সিজন হয়ে গিয়েছে এবার তৃতীয়টি আসছে। হিন্দি ছবির কিছু কথা হয়েছে। এখনও ফাইনাল হয়নি।