বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
প্রিয়তোষ ২০২১ সালে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হওয়ার পর দক্ষিণ ভারতের একটি নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণারত রয়েছেন। গণিত বিভাগের গবেষক সুকন্যা দাসের বাড়ি বোলপুরের শ্রীনিকেতনে। বিশ্বভারতীর প্রথম গবেষক হিসেবে সুকন্যা এই কৃতিত্ব অর্জন করলেন। তিনি ছোট থেকেই বিশ্বভারতীর পড়ুয়া। এই ফেলোশিপের জন্য আগামী ছ’মাস তিনি ফ্রান্সের ক্লড বার্নার্ড লিওন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করবেন। এই গবেষণা চালানোর জন্য ফ্রান্স সরকার তাঁকে প্রতিমাসে ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা দেবে।
প্রসঙ্গত, ভারতের বিশিষ্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক সিভি রামন ও বিশিষ্ট ফরাসি নোবেলজয়ী পদার্থবিদ জর্জেস চার্পাকের নামে এই ফেলোশিপ প্রোগ্রাম ২০১৩ সাল থেকে শুরু হয়। মূলত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী গবেষণার পরিধি ও গভীরতা প্রসারিত করার জন্য এই ফেলোশিপ দেওয়া শুরু হয়। এতে দুই দেশের গবেষক ছাত্রছাত্রীদের আদান-প্রদান, গবেষণা ক্ষেত্রে এটি অন্য উচ্চতায় পৌঁছনোর অন্যতম সেরা মাধ্যম। ফ্রান্সের এই ফেলোশিপের মূল লক্ষ্য দু’দেশের গবেষক পড়ুয়াদের দক্ষতা উন্নত করার পাশাপাশি উচ্চতর গবেষণায় সুযোগ দেওয়া। তাই দুই দেশের হাজার হাজার পড়ুয়ার মধ্যে এই ফেলোশিপ পাওয়া মুখের কথা নয়। সেই কাজটাই করে দেখিয়েছেন গণিত বিভাগের পড়ুয়া।
সুকন্যার পড়াশোনার হাতেখড়ি বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী সন্তোষ পাঠশালা ও শিক্ষাসত্রে। তাঁর বাড়ি বোলপুরের রামকৃষ্ণপল্লিতে। ছোটবেলায় তিনি মামাবাড়ির দাদু সরোজাক্ষ মহান্তের কাছে অঙ্ক শিখতেন। বাবা লাভপুর হাসপাতালের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কানাইলাল দাস। বরাবরই পড়াশোনায় মেধাবী ও অঙ্কে তুখোর সুকন্যা এরপর ভর্তি হন বিশ্বভারতী শিক্ষাভবনের গণিত বিভাগে। সেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। বর্তমানে তিনি গণিত বিভাগের অধ্যাপক লক্ষ্মীনারায়ণ গুঁইয়ের তত্ত্বাবধানে ‘ম্যাথামেটিক্যাল বায়োলজি’ নিয়ে গবেষণা করছেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি রামন-চার্পাক ফেলোশিপে আবেদন করেন। পরবর্তীতে তাঁর গবেষণার বিষয়ের জন্য তিনি এই ফেলোশিপে মনোনীত হন। এই খবরে অত্যন্ত আনন্দিত তাঁর গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীর প্রথম কোনও গবেষক হিসেবে সুকন্যা এই স্বীকৃতি পেল। সারা ভারত থেকে মোট ২৫ জন এই স্বীকৃতি পেলেও গণিতে মাত্র তিনজন রয়েছেন। তাই এই জটিল বিষয়ে তিনজনের মধ্যে একজন হওয়া মুখের কথা নয়। সুকন্যার জন্য আমরা গর্বিত। ভবিষ্যতে ওর গবেষণার সাফল্য কামনা করি। এই খবরে সুকন্যার স্বামী পেশায় সফ্টওয়্যার ডেভেলপার সুমিতকুমার ঘোষও খুশি। সুকন্যা বলেন, এই খবরে প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে ফ্রান্সে গবেষণা করতে পারব ভেবে গর্ব হচ্ছে।