বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আবির চট্টোপাধ্যায় অর্জুন চক্রবর্তী ঈশা সাহা
খরাজ মুখোপাধ্যায় আরিয়াণ ভৌমিক
সুবর্ণ সেন ওরফে সোনাদা (আবির চট্টোপাধ্যায়) পাকাপাকি ভাবে দেশে ফিরে এসেছে। অধ্যাপনাও শুরু করে দিয়েছে। ওদিকে আবির (অর্জুন চক্রবর্তী) নিজের চেম্বার খুলে ওকালতি শুরু করেছে। আবিরের প্রেমিকা ঝিনুক (ঈশা সাহা) আর কিছুদিনের মধ্যেই থিসিস জমা দেবে। পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ থেকে চরিত্রগুলোকে নিয়ে এসে সিক্যুয়েল ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’-এ এই অবস্থায় সাজিয়েছেন। ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’র মতোই ছবি শুরুর আগে চমত্কার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। তারপর শুরু হয় গল্প। গল্প শুরু হয় বললে খানিক ভুল বলা হবে। শুরু হয় গল্প শুরু হওয়ার আগের গল্প।
প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো একটি ছুরি চুরি গিয়েছে। কিন্তু এই ছুরি তো যে সে ছুরি নয়, কাজেই সেই ছুরি উদ্ধারের পথ দেখাতে পুলিস সোনাদার শরণাপন্ন হয়। পুলিস বলতে আবার সেই মণিকান্তপুরের পুলিস ইনস্পেক্টর মিস্টার সরকার। ঝিনুকের জন্মদিনে ইনস্পেক্টর সেই ছুরি নিয়ে হাজির। অন্যদিকে দুষ্কৃতীদের কাছে সেই খবর পৌঁছে গিয়েছে। একটুর জন্য পুলিসের হাত থেকে রক্ষা পায় সেই ছুরি। তবে বেশি দিনের জন্য নয়। ছলে বলে পুলিসের বাড়িতেই লোক ঢুকে আসল ছুরি হাতিয়ে নেয় এবং নকল একখানা রেখে দিয়ে চলে যায়। ওদিকে ছুরির গায়ে লেখা ছিল দুর্গাবতী দেব রায়। সুবর্ণ ক্লাসে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে নিয়ে পড়াতে গিয়ে জানতে পারে, তার ছাত্র ডাম্বেলের (আরিয়ান) বাড়িতে নাকি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এসেছিলেন। কথায় কথায় আরও জানতে পারে এই দুর্গাবতী রায়ের উত্তরপুরুষ হল ডাম্বেল। আর ওদের বাড়ি থেকেই একখানা ছুরি চুরি গিয়েছে। অতএব হিসেব মিলে গেল। এর সঙ্গে ডাম্বেলদের বাড়ির পুজোর নিমন্ত্রণও পেয়ে গেল সোনাদা, ঝিনুক এবং আবির। আবিরের খাই খাইটা সিক্যুয়েলে খানিক বেড়েছে। ঝিনুকের প্রেম আরও খানিক মিষ্টি হয়েছে।
জমিদার দুর্গাবতী দেব রায় তার ধন সম্পদ দুর্গেশগড়ে গচ্ছিত রেখেছিল। তার লেখা বিভিন্ন দুর্গা বন্দনার মধ্যে লুকিয়ে আছে গুপ্তধনের ধাঁধা। সোনাদা এইসব উদঘাটন করতে থাকে। ছবিতে পারিবারিক মেলবন্ধনের সুন্দর দৃশ্য ফুটে উঠেছে। তবে বনেদি বাড়ির বড় ছেলের চরিত্রে গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে বেশ আড়ষ্ট লাগল। আর এক ছেলের চরিত্রে কৌশিক সেন অতুলনীয়।
দুর্গাপুজোয় ছুটি কাটাতে গিয়ে শুরু হল গুপ্তধনের সন্ধান। গল্প এর বেশি বলা উচিত হবে না। সবই ভালো তবে সমস্যা একটাই, ২ ঘণ্টা ১৩ মিনিটের ছবিতে দর্শকদের মূল গল্পে ঢুকতে বেশ খানিকটা ধৈর্য ধরতে হবে। প্রথমার্ধের শেষে গিয়ে হাতে আসে সোনার শঙ্খ। ওখান থেকেই মূলত গল্পের শুরু। আবির, ঈশা, অর্জুন এককথায় চমত্কার। গল্পে আপনাদের জন্য থাকছে বড় ট্যুইস্ট। এছাড়াও লিলি চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, আরিয়ান, লামা, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায় যথাযথ। সৌমিক হালদারের সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো। আর যার কথা না বললে নয় তিনি হলেন এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক বিক্রম ঘোষ। মিউজিক দিয়ে একেবারে আলাদা পরিবেশ তৈরি করেছেন। তার সঙ্গে অবশ্যই গল্পকার শুভেন্দু দাশমুন্সির প্রশংসা প্রাপ্য।
সবমিলিয়ে সোনাদা যে লম্বা রেসের ঘোড়া এ কথা বলাই বাহুল্য। ওদিকে তৈরি হচ্ছে সোনাদার প্রেমিকাও। এবার শুধু তার কণ্ঠ শোনা গিয়েছে। পরে হয়তো দেখাও যাবে। তাছাড়া এমন আনকোরা বাঙালিয়ানায় ভরা ছবি দেখতে কার না ভালো লাগে।
সোহম কর