Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

বাবার ওপরে রাগটা সুস্মিতার আগাগোড়া।
ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। কত মানুষ খেতে পাচ্ছে না এ পৃথিবীতে,অর্থের মূল্য বুঝতে হবে সুমি।’ আর মা তো চিররুগ্ন মহিলা। স্বামীর বলা কথা তার কাছে বেদবাক্য। সুস্মিতা যখন ক্লাস নাইনে পড়ে তখন থেকেই ও জানত, বিনতা বেশি দিন বাঁচবে না। আসলে সুস্মিতার ঠাকুরদা আর দাদু রেলের একই ডিপার্টমেন্টে চাকরি করত। সুস্মিতার ঠাকুরদা হঠাৎই স্ট্রোক হয়ে মারা যান। তখনও তার বছর তিনেক চাকরি বাকি। বিনতার বাবাই ওপর মহলে ছোটাছুটি করে শ্রী সুমঙ্গল রায়কে তার বাবার চাকরিটা পাইয়ে দিতে সাহায্য করেন। সদ্য সায়েন্স গ্রাজুয়েট ছেলে সুমঙ্গল যেন হাতে চাঁদ পায়। আচমকা বাবা মারা যাওয়ায় মা আর বোনকে নিয়ে পথে বসতে হবেই ভেবেছিল। সেখানে বাবার বন্ধুর সহযোগিতায় রেলের চাকরি আর মায়ের পেনশন দুটোই চালু হয়েছিল মাত্র এক বছরের মাথায়। সত্যি বলতে কি, চাকরির ওই বাজারে অমন একটা কেন্দ্রীয় সরকারের শাসালো চাকরি বিনা পরিশ্রমে পেয়ে যাওয়ায় সুমঙ্গল বন্ধুবিহীন হয়ে যায়। সকলেই হিংসার চোখে দেখত। বোনের বিয়ে দেওয়ার সময়েও সাহায্য করেছিল, সুস্মিতার দাদু। তারপরেই দাদু গুরুদক্ষিণা চাওয়ার মতোই নিজের হার্টের রোগী মেজমেয়ে বিনতার বিয়ে দিতে চান সুমঙ্গলের সঙ্গে। সুমঙ্গলের পরিবার তখন কৃতজ্ঞতার ভারে ন্যুব্জ। তাই বিনতার সঙ্গে সুমঙ্গলের বিয়ে হয়ে যায়। বছরের মধ্যে চার মাস সুস্থ থাকলে আট মাস অসুস্থ থাকা বিনতা স্বামী আর শাশুড়ির কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়েই রয়ে যায়।
...
সুস্মিতার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীনই ওর মা মারা গেল। এটা ওর কাছে আকস্মিক কিছু ছিল না। ক্লাস নাইন থেকেই মায়ের শরীর এতটাই খারাপ হতে শুরু করেছিল যে মনে হতো এ রাতটা বুঝি কাটবে না। তাই বাড়িটাকে মনে হতো নার্সিংহোম। চারিদিকে ওষুধের গন্ধ। একজন আয়া মায়ের সবসময় দেখাশোনা করত। রোজই স্কুলে বেরনোর সময় মা ঘর থেকে বলত, দুর্গা দুর্গা। এছাড়া আর কিছুই করার ক্ষমতা ছিল না মায়ের। বাবা প্রায়ই বলত, তোর মা যখন সুস্থ হয়ে যাবে তখন আমরা বেড়াতে যাব। সুস্মিতার মাধ্যমিকের পরে সব বন্ধুরা পুরী, দার্জিলিং, সিমলা ঘুরতে গেলেও বিনতার অসুস্থতার কারণে সুস্মিতা শুধু পিসির বাড়ি টাটানগর গিয়েছিল এক সপ্তাহের জন্য। সত্যি বলতে কী একটু বড় হতেই অসুস্থ মায়ের হাঁপানির আওয়াজ শুনতে শুনতে এ বাড়িটার প্রতিই একটা বিতৃষ্ণা জন্মে গিয়েছিল সুস্মিতার।
...
তবে মা মারা যাবার পরে বাবার মধ্যে অদ্ভুত একটা পরিবর্তন এসেছিল। বাবা অফিসের অতিরিক্ত যতক্ষণ বাড়িতে থাকত, মায়ের ঘরটাতেই কাটাত। 
সুস্মিতা বড় হচ্ছিল নিজের মতোই। রাঁধুনি রান্না করে দিয়ে যেত, বাবা আর সুস্মিতা নিজেদের সময় মতো বেড়ে খেয়ে নিত। বাবা ওকে পড়াশোনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে এলেও সুস্মিতা একটু কাঠ কাঠ ভাবেই উত্তর দিত, ‘থাক না বাবা, আমি তো আমার ছন্দেই বড় হলাম, শুধু শুধু আর এসব নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করছ কেন?’
কলেজে ভর্তি হবার পরেও সেভাবে বন্ধু হয়ে ওঠেনি সুমির।তাই কলেজের পরে নিজের বাড়ির ছাদই ছিল ওর একান্ত অবসর যাপনের জায়গা। মা চলে যাবার পরে বাড়িটাতে ওষুধ ওষুধ গন্ধটা চলে গেলেও নিঝুম ব্যাপারটা থেকেই গেল। 
ওদের তিনতলা বাড়ির একতলাতে হঠাৎই এক মা আর ছেলে ভাড়াটে হয়ে এল। সুস্মিতা কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই, বাবা কৈফিয়তের সুরে বলেছিল, ‘বাড়ির একতলাটা পড়েই আছে তাই ভাবলাম ভাড়া দিয়ে দিই।’
সুস্মিতা তখন থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট। অবাক চোখে তাকিয়ে বলেছিল, ‘তোমার বাড়ি তুমি কাকে ভাড়া দেবে সেটা একান্ত তোমার ব্যাপার। আমায় কেন বলছো? আমি জানি অর্থের মূল্য। সারাটা জীবন সাধারণভাবে কাটাতে কাটাতে বুঝে গেছি, আমার বাবার অর্থের ওপরে আমার কোনও অধিকার নেই। যদিও দাদুর চাকরির ওপরে তোমার অধিকার ছিল।’
কথাগুলো শুনে বাবা চুপ করেই বসেছিল। কিন্তু কথাগুলো বলতে পেরে অনেকটা হালকা হয়েছিল সুস্মিতা। 
বইপত্র, পড়াশোনার খরচ ছাড়া বাবা সেভাবে কিছুই দিত না সুস্মিতার হাতে। কত ছোট ছোট শখকে ও গলা টিপে মারতে বাধ্য হয়েছে টাকার অভাবে। সুস্মিতার অনেক বন্ধুই গরিব, তাদের ওটাই সান্ত্বনা, কিন্তু সুস্মিতা জানে ওরা অবস্থাপন্ন তারপরেও সামান্য ইচ্ছেগুলোও অপূর্ণ রয়ে গেল ওর।
এখন আবার আদিখ্যেতা করে ওর পারমিশন নিচ্ছে বাবা, এ বাড়িতে ভাড়াটে রাখবে কি না সে ব্যাপারে। 
...
সুস্মিতা রাতে ঘুমের ঘোরেও মাঝে মাঝেই শুনতে পায় বাবা কাশছে। কাশির বেগটা বেশ বেশি। কিন্তু ওদের দুজনের মধ্যে মানসিক দূরত্ব এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে সুস্মিতা কখনও ছুটে গিয়ে জল এগিয়ে দিলে বাবাও অবাক হতো, আবার ওরও মনে হতো বেশিই বাড়াবাড়ি করছে। কারণ আর সকলের মতো বাবা ওর বন্ধু হয়ে ওঠেনি কোনওদিন।
তবে বাবা যে অসুস্থ সেটা সুস্মিতা বেশ টের পাচ্ছিল। একদিন বিকেলে ইতস্তত করেও বাবার ঘরে ঢুকে বলছিল, ‘ভালো একজন ডাক্তার তো দেখাতে পার। নাকি সাধারণ জীবনযাপন করা মানুষরা ডাক্তারও দেখায় না।’ বাবা বিছানায় শুয়েই হাত বাড়িয়ে ডেকেছিল সুস্মিতাকে। নরম গলায় বলেছিল, ‘বাবার ওপরে তোর বড্ড রাগ তাই না রে? জানিস সুমি, সবাই মনে করত তোর দাদুই বুঝি আমায় টুপি পরিয়ে হার্টের রোগী বিনতার সঙ্গে আমার বিয়ে দিয়েছিল। শুধু আমার মা আর আমি জানতাম বিনতা একা রোগী নয়। রোগী আমিও। জন্ম থেকেই আমার ফুসফুসে সমস্যা। বিনতা জেনেছিল বিয়ের অনেক পরে। ধোঁয়া থেকে ধুলো সবেতেই কষ্ট পাই আমি। মাস পাঁচেক ধরে ইনফেকশনও হয়েছে। জানি আমি বাঁচব না। বিনতা হয়তো ডাকছে আমায় ওপরে। তোর কাছে একটা অনুরোধ করব? অতনু আর ওর মা রাজশ্রীকে এ বাড়িতেই একটু ঠাঁই দিস। তাড়িয়ে দিস না।’
সুস্মিতা ঠিক কী বলবে বুঝতে না পেরেই পিসিমণিকে ফোন করে বলেছিল, ‘বাবার তো ট্রিটমেন্ট দরকার। তুমি কি কিছু করতে পারবে?’ পিসিমণি বলেছিল, ‘ফুসফুসের ইনফেকশন নিয়ে বহু ট্রিটমেন্ট করানো হয়েছিল আগেই। কিন্তু ডাক্তাররা জবাব দিয়ে দিয়েছিল। তোকে বলতে বারণ করেছিল দাদা।’ সুস্মিতা ফোন রেখে চুপ করে ছাদে দাঁড়িয়েছিল।
মা চলে যাবার পরে বিশেষ কিছু মনে হয়নি সুস্মিতার। কিন্তু বাবা বাঁচবে না ভেবেই এই প্রথম অদ্ভুত একটা শীতল স্রোত নেমে গিয়েছিল ওর মেরুদণ্ড বেয়ে। এত বড় বাড়িতে ও একা! বাবা কোনওদিনই মেয়েকে সেভাবে আদরে-আবদারে রাখেনি ঠিকই কিন্তু স্কুলের গার্জেন মিটিং-এর দিন ঠিক অফিস থেকে পৌঁছে যেত ওর স্কুলে। প্রতিটা বোর্ড এগজামের সময় স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকত বাবাই। হয়তো এইভাবেই কিছুটা জায়গা করে নিয়েছিল সুস্মিতার মনে। নাহলে বাবা আর বাঁচবে না ভেবে এতটা কষ্ট কেন হচ্ছে! মাত্র একমাসের মধ্যেই সমস্ত ছোটাছুটি, সব ট্রিটমেন্টকে ব্যর্থ করে বাবা চলে গিয়েছিল। 
...
বাবার শ্রাদ্ধ-শান্তির পরে বাবারই এক কলিগ বলেছিল, ‘সুমঙ্গলদার চাকরি তো এখনো বছর পাঁচেক ছিল, তাই তার একমাত্র সন্তান হিসেবে চাকরিটা তুমিই পাবে। অফিসে এসে দেখা কর। সব ডকুমেন্ট নিয়ে আসবে। বাবার ডেথ সার্টিফিকেট থেকে সবকিছু।’
বুকটা ভারী হয়ে গিয়েছিল সুস্মিতার। বাবার সঙ্গে যতবারই তর্কাতর্কি হতো, ততবারই সুস্মিতা ঠাকুরদার চাকরিটা বাবা নিয়েছিল এই খোঁটা দিয়েই বাবাকে থামিয়ে দিত।
ডকুমেন্ট নিয়ে অফিসে যাবার আগেই দেখল এক উকিল নিয়ে নীচেতলার ভাড়াটে এসে হাজির। পিসিমণি, পিসেমশাই তখনও বাড়িতেই ছিল। সুস্মিতাকে একটু গুছিয়ে দেবে বলেই থেকে গিয়েছিল পিসিমণি। অতনু আর তার উকিল এসে পরিষ্কার বলল, এ বাড়ির ভাগ থেকে ওই সুমঙ্গল রায়ের সরকারি চাকরির ভাগিদার নাকি পুত্রসন্তান হিসেবে প্রথমে পাবে অতনু। এমনকী প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার ভাগ অর্ধেক অতনুর। ঘরের মধ্যে বাজ পড়লেও বোধহয় ওরা এতটা অবাক হতো না। সুস্মিতা কিছু বলার আগেই পিসিমণি চমকে উঠে বলল, ‘দাদার ছেলে মানে? আমার দাদার একটাই সন্তান সুস্মিতা রায়। ওরা আমাদের বাড়ির ভাড়াটে মাত্র।’
উকিল মশাই পিসিমণির হাতে অতনুর বার্থ সার্টিফিকেটটা ধরিয়ে দিয়ে বলল, ‘এই যে বাবার নামটা দেখুন। পরিষ্কার লেখা আছে সুমঙ্গল রায়। মা- রাজশ্রী রায়।’
ধপ করে বসে পড়ল পিসিমণি।
অফিসে পৌঁছেও সুস্মিতা দেখল, অতনু অলরেডি সব ডকুমেন্ট জমা দিয়ে চাকরির দাবি জানিয়েছে। সুস্মিতা বাড়ি ফিরে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে নিজের ঘরে বসে ছিল। তারপর পিসিমণিকে গিয়ে বলল, ‘তার মানে সুমঙ্গল রায় একজন দুশ্চরিত্র লোক ছিল। তোমার দেবতার মতো দাদা আসলে বিনতা রায়কেও ঠকিয়েছে, আমার দাদুকেও ঠকিয়েছিল। বিশ্বাস কর পিসিমণি আমার বাবা কিপটে ছিল এটা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু মা বেঁচে থাকতে আরেকটা সংসার করেছে এটা মানতে পারছি না। লোকটা এতটা নীচে নেমে গিয়েছিল! অথচ জনসমক্ষে ভবমূর্তিটা রেখেছিল জলের মতো স্বচ্ছ। বিশাল পরোপকারী মানুষ।’ পিসিমণি বলল, ‘হ্যাঁ, অতনু তোর থেকে মাত্র মাস পাঁচেকের ছোট। তারমানে তুই জন্মের আগেই এই মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল দাদার! জানিস সুমি এটা আমিও মেনে নিতে পারছি না। তোর পিসেমশাই কেস করবে বলছে। বলছে এটা ফ্রড।’ সুস্মিতা বলল, ‘পিসিমণি বাবা কিন্তু মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগেই বলেছিল, অতনু আর ওর মাকে বাড়ি ছাড়া করিস না। তারমানে এটা পরিষ্কার যে ওরা শুধু ভাড়াটে নয়। বাবা নিজে জানত আর বাঁচবে না তাই কি এদের আচমকা বাড়িতে এনে রাখল? পিসিমণি কেস করতে গিয়ে আবার কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরবে না তো? শেষে দেখা যাবে সম্মান নিয়ে বাঁচাই দুষ্কর হয়ে উঠেছে।’
পুত্রসন্তান ছিল বলেই হয়তো সুস্মিতার প্রতি এতটা অনাগ্রহ ছিল ভদ্রলোকের। চিররুগ্ন মা জেনে গেল তার স্বামী দেবতুল্য মানুষ, আসলে আড়ালে যে এত বড় খেলোয়াড় সেটা জানতেই পারল না।
ওদের কথার মাঝেই রাজশ্রী এসে দাঁড়িয়েছে দরজায় খেয়াল করেনি সুস্মিতা। একটা ম্যারেজ সার্টিফিকেট সুমির হাতে দিয়ে বলল, ‘এই যে সুমঙ্গলদা আমার হাজবেন্ড নয় তার প্রমাণ। অতনু হলো জাত বেইমান। আসলে বেইমান বাড়ির রক্ত বইছে কি না শরীরে। তাই সুমঙ্গলদার নামে এমন কলঙ্ক লাগাতে পারল। আমার স্বামী আর সুমঙ্গলদা ছিল স্কুলের বন্ধু। আমি  যখন আটমাসের গর্ভবতী, তখন আমার স্বামী গৌতমের গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট হয়। সে মারা যায়। শ্বশুরবাড়ি থেকে আমায় তাড়িয়ে দিয়েছিল অপয়া বলে। তখন সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। একমাত্র পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল সুমঙ্গলদা। আমার শারীরিক অবস্থা তখন বেশ কঠিন। গ্রামের হসপিটালে বন্ডে সাইন করতে হয়েছিল সুমঙ্গলদাকেই স্বামী হিসাবে। তাই বার্থ সার্টিফিকেটে অতনুর বাবার নাম সুমঙ্গল রায়। অতনুর আর আমার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছিল সুমঙ্গলদা। অতনুকে পড়াশোনা করানো, আমাদের বাড়ি ভাড়া করে রাখা সব। বিনতা বউদিও চিনত আমাদের। নিয়ে গিয়েছিল সুমঙ্গলদা। কিন্তু সমাজের চোখে সবাই খারাপ ভাববে বলেই বিষয়টা চাপা দিয়ে রেখেছিলাম আমরা সবাই। আমায় বলেছিল, রাজশ্রী সুস্মিতা আমার মেয়ে, ও সবটা জানলে তোমাদের আশ্রয় দেবে, চিন্তা নেই। কিম্তু আমার ধারণার বাইরে ছিল, অতনু এরকম করবে। তুমি চিন্তা কর না সুমি আমি দাঁড়াবো তোমার পাশে। অতনু গৌতম রায়ের সন্তান।ৱআমি সাক্ষী দেব মা হিসেবে।’ সুস্মিতার চোখে জল। বাবা ওকে এতটা বিশ্বাস করত? অতনু বুঝেছিল এ কেস সে জিতবে না। তাই চুপচাপ পালিয়েছিল। মায়ের ওপরে তার প্রচণ্ড রাগ। তাই মাকে ফেলেই পালিয়েছিল।
সুস্মিতা অফিস থেকে এলে রাজশ্রী পিসিমণিই তাকে খাবার বেড়ে দেয়। অফিসে বেরনোর সময় ‘দুর্গা দুর্গা’ বলে ঠাকুরকে প্রণামও করে।  বাবার অফিসে ঢুকে প্রথমেই যেটা অনুভব করেছিল সুস্মিতা সেটা হল তার বাবা ছকে বাঁধা মানুষ ছিল না। কখনও সিকিউরিটি এগিয়ে এসে বলে, ‘সুমঙ্গল স্যার আমার মেয়ের বিয়েতে কম সাহায্য করেছিলেন, ভগবানের মত মানুষ ছিলেন।’
ছোট থেকে ইচ্ছেপূরণ না হবার জন্য যে তীব্র আক্ষেপটা ছিল সুস্মিতার, সেটা গত পাঁচমাসে কমে গিয়ে সুমঙ্গল রায়ের মেয়ে হিসেবে বেশ গর্ববোধ করে ও মনে মনে।
24th  March, 2024
মেট্রোর দুপুর

সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়ল দীপন। কারণ দুটো— এক, এতগুলো সিঁড়ি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে একটু না দাঁড়ালে আর পারা যাচ্ছিল না। দুই, সামনে মধ্য দুপুরের কলকাতা বৈশাখের রোদে ঝলসাচ্ছে। পা রাখার আগে এটাই শেষ সুযোগ। পকেট থেকে সেলফোনটা বের করল। বসে পড়ল মেট্রোর সিঁড়িতে। চোখ রাখল স্ক্রিনে। 
বিশদ

21st  April, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
আইপিএলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন রোহিত শর্মা ও রিকি পন্টিং। এবার একই সুর শোনা গেল দিল্লি ক্যাপিটালসের অক্ষর প্যাটেলের ...

কথা ছিল বাড়ি ফিরে পাকা বাড়ি দেওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে আর ফেরা হল না। কফিনবন্দি হয়ে ফিরছে পরিযায়ী কিশোর শ্রমিক। কর্মরত অবস্থায় বহুতল ...

রক্তক্ষরণ আটকাতে পারবে কি সিপিএম? আটকানো যাবে কি বামের ভোট রামে যাওয়া? —মূলত এই দু’টি প্রশ্নই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। ব্রিগেড ভরাতে পারলেও ভোটবাক্স ভরাতে পারবেন কি না, তা নিয়েই এখন চিন্তিত সিপিএমের বঙ্গ রাজনীতির কুশীলবরা। ...

মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধর সংক্রান্ত মামলায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর পরিবারকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতে নির্দেশ, তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিস। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: ২৪ রানে আউট জয়সওয়াল,রাজস্থান ৬০/২(৬.১ ওভার), টার্গেট ১৯৭

10:05:17 PM

আইপিএল: কেকেআরকে ৮ উইকেটে হারাল পাঞ্জাব

11:31:28 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি শশাঙ্ক সিংয়ের, পাঞ্জাব ২৪৬/২ (১৭.৪ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:26:31 PM

আইপিএল: ৪৫ বলে সেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ২১০/২ (১৬.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

11:13:32 PM

আইপিএল: ২৬ রানে আউট রাইলি রুশো, পাঞ্জাব ১৭৯/২ (১৩ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:56:50 PM

আইপিএল: ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি জনি বেয়ারস্টোর, পাঞ্জাব ১২০/১ (৯.১ ওভার) টার্গেট ২৬২

10:36:30 PM