রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, করোনার পর থেকেই দেশে পাইকারি ও খুচরো বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। বৃদ্ধির হারে মাঝেমধ্যে সামান্য তারতম্য ঘটলেও তা কখনওই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া শতাংশের নীচে নামেনি। গত পাঁচ মাসে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতে পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ০.২০ শতাংশ। কিন্তু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৬.৯৫ শতাংশ হারে। আনাজের মূল্যবৃদ্ধি ১৯.৭৮ শতাংশ, ডালের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ১৮.৪৮ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে খুচরো বাজারেও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৮.৬৬ শতাংশ হারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইকারি মূল্যসূচকে খাদ্যপণ্যের ভাগ কম। ফলে বাজারে তার প্রভাব তেমন চোখে পড়ে না। কিন্তু খুচরো বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আশঙ্কাজনক বেশি হলে তা ক্রেতাকে সরাসরি আঘাত করে। ফলে এই ছবিটা না বদলালে জীবন হয়ে ওঠে আরও দুর্বিষহ। দেশের আম জনতার অবস্থা এখন তেমনই। দুর্ভাগ্য হল, এসব জেনেবুঝেও প্রধানমন্ত্রী ‘মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে’ বলে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন! তিনি হয়তো দেখাতে চাইছেন, মূল্যবৃদ্ধির হার ৮ থেকে কমে ৭ শতাংশ বা ৭ শতাংশ থেকে কমে ৬ শতাংশ হয়েছে। অতএব মূল্যবৃদ্ধি ‘নিয়ন্ত্রণে’ এসেছে, জিনিসপত্রের দাম কমতে শুরু করেছে। কিন্তু ঘটনা হল, নির্দিষ্ট মাত্রার নীচে (৪ শতাংশ) মূল্যবৃদ্ধির হার না নামলে মানুষের কোনও সুরাহা হয় না। প্রধানমন্ত্রী এই বাস্তব সত্যটাকে আড়াল করে একটা ‘ফিল গুড’ ছবি দেখানোর চেষ্টা করছেন। অথচ গরমের মরশুমে খাদ্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে চলেছে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আরবিআই। বলেছে, দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এখন থেকেই কড়া নজরদারি দরকার। কারণ মূল্যবৃদ্ধি শিখরেই আছে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নরের বক্তব্য, যে হারে মূল্যবৃদ্ধির হার কমার প্রত্যাশা ছিল, সেটা হচ্ছে না। তাই আগামী অক্টোবর মাসের আগে রেপো রেট কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ব্যাঙ্কের সাফাই, মূল্যবৃদ্ধির জন্যই রেপো রেট কমানো যাচ্ছে না। অর্থাৎ গরিব মধ্যবিত্ত সেই তিমিরেই।
ঘটনা হল, খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। যার ফলে আগামী দিনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা। বলা হচ্ছে, যদি ঠিকমতো বৃষ্টি হয় তাহলে মূল্যবৃদ্ধির হার অক্টোবরে ৩.৮ শতাংশে নামতে পারে। দেশে স্বাভাবিক বর্ষা হলে গম ও খরিফ চাষে উন্নতি হবে। তাহলে কৃষি সহ গ্রামীণ কর্মকাণ্ড বাড়বে। যার পরিণতিতে বিক্রিবাটাও বাড়বে। এও বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম সামান্য হলেও কমিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। ফলে খাদ্যপণ্যের দাম আগামী দিনে আরও কমবে। কিন্তু এই একাধিক ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ফল যদি উল্টো হয়? অর্থাৎ দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হল, তাপপ্রবাহে একাধিক ফসল নষ্ট হল, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ফের বেড়ে গেল— তাহলে তো ফল হবে উল্টো। মানে দাম আরও বাড়বে। উপরন্তু ভোটের স্বার্থে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম কিছুটা কমলেও ভোট মিটলে ফের দাম বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে তাই আগামী দিন কোনও আশার আলো দেখাচ্ছে না। বরং নরেন্দ্র মোদি ফের ক্ষমতায় ফিরলে দাম বৃদ্ধিই হয়তো রুটিন হয়ে দাঁড়াবে।