বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
বাজারে আছে একাধিক বহুজাতিক সংস্থার নামজাদা হরেক ব্র্যান্ডের গুঁড়োসাবান। আবার তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাজার ধরছে দেশীয়, তথা কলকাতার একাধিক সংস্থাও। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের আক্ষেপ, সেই প্রতিযোগিতায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছে ওয়েবসি ব্র্যান্ড। তাদেরই পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৫ বা ২০০৬ সালেও বাজারে রমরমিয়ে চলত ওই গুঁড়োসাবান। সেই সময় ৩৩টি সংস্থাকে ওই সাবান তৈরিতে নিযুক্ত করেছিল রাজ্য। তখন বছরে তিন হাজার টন সাবানগুঁড়ো বিক্রি করত ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড। বছর দশেক পেরতে না পেরতেই সেই বিক্রি কমতে থাকে। ২০১৫ সালে এসে সংস্থার বার্ষিক বিক্রি দাঁড়ায় ৭৫০ টন। কিন্তু বর্তমানে একেবারে কোমায় চলে গিয়েছে বিক্রি। বছরে মেরেকেটে ২০ থেকে ২৫ টন গুঁড়োসাবান বিক্রি করতে কালঘাম ছুটছে দপ্তরের। কেন এই হাল?
দপ্তরের কর্তাদের কথায়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ওয়েবসি ব্র্যান্ডের সাবানগুঁড়োর দাম বাড়ানো হয়নি। কেজি প্রতি তার দাম ৪০ টাকা। যখন জিএসটি আসেনি, তখন ওই সাবানগুঁড়োর উপর ভ্যাট আরোপ করার নিয়ম ছিল। কিন্তু যেহেতু এটি সরকারি পণ্য, তাই প্রতিযোগিতায় জায়গা দখল করতে রাজ্য সরকার ভ্যাট মকুব করে দিত। তাতে লাভের ভাগ বেশি থাকত। কিন্তু জিএসটি এসে যাওয়ায় কর মকুবের কোনও জায়গা নেই। ডিটারজেন্টের সর্বোচ্চ দামের মধ্যে ঢুকে থাকছে জিএসটি। তাতে লাভের অঙ্কে টান পড়ছে। তাই কোনও সংস্থাই আর ওয়েবসি তৈরিতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। এদিকে লাভ কমে যাওয়ায় রেশন দোকানগুলিও আর ওয়েবসি বেচতে রাজি নয়। এখন মাত্র পাঁচটি সংস্থা ওই ডিটারজেন্ট তৈরি করে। কিন্তু তাও ব্র্যান্ডটিকে শুধু টিঁকিয়ে রাখার জন্যই তা উৎপাদিত হয়। দিনের শেষে এক কেজি সাবানগুঁড়ো বিক্রি করে ৫০ পয়সাও লাভ করা যায় না, এমনই বক্তব্য দপ্তরের কর্তাদেরই।
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বিপ্লব রায়চৌধুরীর কথায়, ওয়েবসি’র বাজার ধরতে এক সময় বিপণনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত। নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন। ভাগ্যবান ক্রেতারা যাতে হরেক পণ্য জিততে পারেন, ছিল তার সুযোগও। কিন্তু ক্রমশ বাজার হারিয়েছে ওয়েবসি। আমরা আবারও চেষ্টা করছি ব্র্যান্ডটিকে চাঙ্গা করার। ইতিমধ্যেই আমরা খাদ্য দপ্তরের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছি, যাতে রেশন দোকানে বেশি পরিমাণে ওয়েবসি সাবানগুঁড়ো রাখা যায়। লাভের দিকটি মাথায় রেখে কী করলে তার উৎপাদন ও বিক্রি বাড়ানো যায়, তা নিয়ে ভেন্ডরদের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। আশা করি আমরা ওয়েবসি’র পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারব। কর ও লাভের দিকটিতে সামঞ্জস্য রাখার জন্য অর্থ দপ্তরের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে চায় ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড।