বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে সিন্ধুর যা ঈর্ষনীয় ট্র্যাক রেকর্ড, যা অক্ষত থাকবেই আগামী বেশ কয়েক বছর। ২০১৭ সাল থেকে টানা তিনবার ফাইনাল খেলে প্রথমবার সোনার স্বাদ পেলেন সিন্ধু। এর আগে দু’বার রুপো পেয়েছিলেন। ২০১৩ ও ১৪ সালের সিন্ধু জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ। গত কয়েকটি টুর্নামেন্টে বারবার ফাইনালে উঠেও হেরে যাওয়ার পর ‘চোকার্স’ শব্দটাই তাঁর নামের পাশে একপ্রকার সেঁটে গিয়েছিল। রবিবার বিশ্ব সেরা হয়ে শরীর থেকে সেই ‘চোকার্স’ স্ট্যাম্প নিজেই উঠিয়ে দিলেন বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে পঞ্চম বাছাই সিন্ধু। সোনা জেতার খিদে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই বুঝিয়ে দিলেন তিনি। যার তেজে পুড়ে ছাড়খাড় ছোটখাটো চেহারার প্রতিযোগিতার তৃতীয় বাছাই ওকুহারা।
বিশ্ব মিটে সিন্ধু অন্যতম সফল মহিলা সিঙ্গলস প্লেয়ার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করলেন। যার ঝুলিতে রয়েছে পাঁচটি পদক। যে প্রতিযোগিতায় তিনি মোট ছ’বার অংশ নিয়েছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চতুর্থ সিঙ্গলস প্লেয়ার হিসেবে সবকটি পদক (সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ) জেতার কৃতিত্ব অর্জন করলেন তিনি। দু’ বছর আগে ২০১৭ সালে এই বাসেলেই অনুষ্ঠিত বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে ওকুহারার কাছেই হেরেছিলেন সিন্ধু। সেবার ১১০ মিনিটের এক ঐতিহাসিক ফাইনালে (টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দীর্ঘতম ফাইনাল) সিন্ধুকে রুপো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। দু’বছর বাদে সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিলেন সিন্ধু। রবিবার কোনওভাবেই সিন্ধু প্রতিপক্ষকে মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগ দেননি। মাত্র ৩২ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করে দেন সিন্ধু। এদিন ম্যাচের পর বিশিষ্ট ব্যাডমিন্টন বিশেষজ্ঞ ও ধারাভাষ্যকার জিলিয়ান ক্লার্ক বলেন, ‘এমন একপেশে ফাইনাল শেষ কবে দেখেছি, মনে পড়ছে না! এ যেন ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক।’
রবিবার ফাইনালে জেতার পর ওকুহারার বিরুদ্ধে ৯-৭ ফলে এগিয়ে গেলেন সিন্ধু। এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন ভারতীয় তারকা। প্রথম গেমেই সিন্ধু ৮-১ পয়েন্টে লিড নেন। ওকুহারাকে ডিফেন্স ও অ্যাটাক করার করা সুযোগই দেননি সিন্ধু। ব্যাককোর্টের চার কোণ দিয়েই শট খেলেই ওকুহারাকে চাপে ফেলে দেন সিন্ধু। এদিন সিন্ধু বেশি ক্লিনিক্যাল শট খেলে ওকুহারাকে পিছু হটতে বাধ্য করেন। সিন্ধুর লক্ষ্যই ছিল ডিপ কর্নারে শট খেলা। বিশেষ করে তাঁর ‘শক্তিশেল’ স্ম্যাশকে কাজে লাগিয়েই। সিন্ধু ৮-১ পয়েন্টে এগিয়ে যাওয়ার পরই ওকুহারা দুটি স্ম্যাশে পয়েন্ট নিয়ে ২-১১ করেন। এরপর সিন্ধু ১৬-২ পয়েন্টে এগিয়ে যান। প্রতিপক্ষের দু’বার আনফোর্সড এররের সুযোগ নিয়ে ওকুহারা পয়েন্টের ব্যবধান কিছুটা কমান। কিন্তু সিন্ধুকে আটকানো যায়নি। শেষ দিকে অনবদ্য কয়েকটি বডি স্ম্যাশে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে প্রথম গেম জিতে নেন সিন্ধু।
দ্বিতীয় গেমের শুরুতেই ক্রসকোর্ট স্ম্যাশে সিন্ধু দ্রুত দুটি পয়েন্ট তুলে নেন। সিন্ধুর ধারালো রিটার্নের কোনও জবাব ওকুহারার কাছে ছিল না। বিশেষ করে সিন্ধুর কোণাকুণি রিটার্ন ও একইসঙ্গে তার ফলোআপ এককথায় অনবদ্য! দ্বিতীয় গেমের বিরতির আগেই সিন্ধু ১১-৪ পয়েন্টে লিড নেন। সেখান থেকে সিন্ধু এগিয়ে যান ১৬-৪ পয়েন্টে। শেষ পর্যন্ত এক অসাধারণ রিটার্নে ম্যাচ পয়েন্ট নিয়ে জয়ের আনন্দে শূন্যে হাত ছুঁড়ে দেন ভারতীয় তারকা। বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে সিন্ধুর সোনা ও পুরুষ সিঙ্গলসে প্রণীতের ব্রোঞ্জ জয়, দেশীয় ব্যাডমিন্টনের এক সোনার অধ্যায় রচিত হল।