আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, রাউন্ড লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ১০ রানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেওয়ায় সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডকে এড়াতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে ভারত। কারণ, কোহলি বাহিনী রবিন লিগে একটাই ম্যাচে হেরেছিল। সেটা আয়োজক দেশের বিরুদ্ধে। তুলনামূলকভাবে শেষ চারে নিউজিল্যান্ড কিছুটা হলেও ভারতের কাছে সহজ প্রতিপক্ষ। গতবারের ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড এবারও শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে নাটকীয়ভাবে। তার উপর গত তিনটি ম্যাচে কিউয়িরা জয় পায়নি। এই পরিসংখ্যান বিরাট কোহলির মুখের হাসি চওড়া করার পক্ষে যথেষ্ট।
তবে ক্যাপ্টেন কোহলিকে অনেকটাই চাপমুক্ত করেছে রহিত শর্মার দুরন্ত ফর্ম। যা শুধু ভারতকে শীর্ষে থেকে সেমি-ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেনি, একই সঙ্গে দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব অনেকটাই লাঘব করে দিয়েছেন ‘হিটম্যান’। পাঁচটি সেঞ্চুরি, আট ম্যাচে ৬৪৭ রান। বিশ্বকাপ যেন রহিতময়। কোহলি তাই বলেছেন, ‘রহিতের থেকে বাকি দু’টি ম্যাচেও সেঞ্চুরি আশা করছি। তাহলে বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরতে পারব। রহিতই এখন একদিনের ক্রিকেটে সেরা খেলোয়াড়।’
চলতি বিশ্বকাপে পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বিরাট কোহলি। তবে শতরান এখনও অধরা। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুযোগ পেলে তিনিও বড় রান করতে চান। কোহলি বলেছেন, ‘রহিত এত ভালো খেলছে বলেই বিশ্বকাপে আমার ভূমিকা বদলে গিয়েছে। দলের স্বার্থে আমি সব কিছুই করতে রাজি। রহিত শুরুতে বড় রানের মজবুত ভিত গড়ে দিচ্ছে। রানের গতি বজায় রাখতে আমাকে অন্য ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে। বলতে পারেন, আমি অনুঘটকের কাজ করছি। যাতে পরের দিকে হার্দিক, কেদার, ধোনি, পন্থরা সহজেই নিজেদের খেলাটা খেলতে পারে। একদিনের ক্রিকেটে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই এগতে হয়। আমি সেটাই চেষ্টা করছি। ব্যাপারটা বেশ উপভোগ্য হচ্ছে। আমি জানি, উইকেট ধরে রাখতে পারলে অন্য ব্যাটসম্যান সহজেই ১৫০, ১৬০, এমনকী ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করতে পারবে। তাতে সহজেই বড় রান তোলা সম্ভব।’
২০০৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ভারত কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল। এগারো বছর পর সিনিয়র দলের অধিনায়ক হিসাবে মঙ্গলবার ফের টস করতে নামবেন কোহলি-উইলিয়ামসন। এই প্রসঙ্গে ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘শুধু ২০০৮ নয়, ২০০৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরের কথাও আমার মনে রয়েছে। কেন উইলিয়ামসন আমাদের দলের এক পেসারের বলে ব্যাকফুটে একটা জোরালো শট খেলেছিল। আমি তখন স্লিপে ফিল্ডিং করছিলাম। দলের এক সতীর্থকে বলেছিলাম, আমি কাউকে এত জোরে শট খেলতে দেখিনি। কেন বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান। ওকে কিন্তু আমাদের থামাতেই হবে। মানুষ হিসাবেই উইলিয়ামসন অসাধারণ। আমরা দীর্ঘদিন ধরে খেলছি। একে অপরকে খুব ভালো চিনি। এবারের বিশ্বকাপে কেন দারুণ ছন্দে রয়েছে। ওকে নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।’
বিশ্বকাপে ভারতের বোলিং কিন্তু আশানুরূপ হচ্ছে না। যশপ্রীত বুমরাহ ছাড়া ভারতের আর কোনও বোলার নেই প্রথম পাঁচে। বুমরাহ আট ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন। চোট সারিয়ে কামব্যাক করলেও ফর্মে নেই ভুবনেশ্বর কুমার। উইকেট পেলেও প্রচুর রান দিচ্ছেন মহম্মদ সামি। তবে শেষ চারে লড়াইয়ে নামার আগে ভারত অধিনায়ক কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা করলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলিং খারাপ হচ্ছে না। তবে উন্নতির আরও সুযোগ রয়েছে। লিগ পর্বের ভুল ত্রুটি শুধরে নিয়ে সেমি-ফাইনালে নামব আমরা। কারণ, নক-আউটে দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়া যাবে না।’
ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারত লিগ পর্বে দু’টি ম্যাচ খেলেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিরাটরা সহজেই জিতেছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও জয় এসেছিল অনায়াসে। তবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমি-ফাইনালের লড়াই ভারতের কাছে সহজ হবে না। বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। খেলা হবে নতুন পিচে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টস গুরুত্বপূর্ণ হবে। কোহলি অবশ্য তা মানতে রাজি নন। তিনি জানান, ‘আমরা টস নিয়ে ভাবছি না। যে কোনও পরিস্থিতির জন্য আমরা তৈরি। ভারতের হয়ে খেললে প্রতিটি ম্যাচই চাপের। আমরা এই ধরনের পরিস্থিতি সামলেই এই জায়গায় পৌঁছেছি। তবে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল সব সময় আলাদা। এখানে স্নায়ুর চাপ যারা নিতে পারবে, তারাই বাজিমাত করবে।’